সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। ছবি: সংগৃহীত।
আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসে হামলার জের। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ভারতীয় দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করল বাংলাদেশ। সে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে। ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, ত্রিপুরার ঘটনার পর সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়। সেখানে ভারত-বিরোধী বেশ কিছু স্লোগানও ওঠে। এই আবহে সোমবার রাতে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, ভারতীয় দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনাপরম্পরা এবং বাংলাদেশের তপ্ত পরিস্থিতির কারণে আগাম সতর্কতা হিসাবে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি এবং সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে গত কয়েক দিন ধরেই দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন ভারতীয়েরা। সমাজমাধ্যমে দু’দেশের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বাগ্যুদ্ধ চরমে। দিল্লি থেকে ঢাকাকে বার বার অনুরোধ করা হয়েছে সে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। যদিও বাংলাদেশের দাবি, সে দেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন।
দু’দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির মাঝে সোমবার ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বিবৃতি প্রকাশ করে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও দেশের দূতাবাস বা উপদূতাবাসকে নিশানা করা কাম্য নয়, তা যে পরিস্থিতিই হোক না কেন। ভারতে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলির সামনে নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধিও করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশনে ভারতীয় দূতাবাস রয়েছে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগানের পরে গুলশনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে সে দেশের প্রশাসন। ঢাকা পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল বাহাদুর আলম সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গুলশনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট এবং খুলনার উপদূতাবাসেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের আইজির দাবি, চট্টগ্রামে নিরাপত্তা আট গুণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঢাকা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (গুলশন বিভাগ) তারেক মাহমুদ জানিয়েছেন, গুলশনে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সাম্প্রতিক টানাপড়েনের অন্যতম ভরকেন্দ্র চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে মামলা চলছে চট্টগ্রামের আদালতে। মঙ্গলবার ফের তাঁর জামিন মামলার শুনানি হওয়ার কথা। ত্রিপুরার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার রাতে চট্টগ্রামেও বিক্ষোভ হয়েছে। শুধু ঢাকা বা চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের একাধিক জেলায় সোমবার রাতে বিক্ষোভ হয়েছে।