আব্দুল মাজেদ। —ফাইল চিত্র
শনিবাবার ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছোঁয়ার পরেই ঢাকার কেরানিগঞ্জের কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হল শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদকে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার দেখানোর পরে ফাঁসি থেকে বাঁচতে বুধবারই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানান মাজেদ। পত্রপাঠ সেই আর্জি খারিজ করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
শুক্রবারই ফাঁসির তোড়জোড় শুরু করেছিলেন কারা কর্তৃপক্ষ। শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০ জন জহ্লাদের একটি দল গড়া হয়। প্রথম ফাঁসির জন্য ধুয়ে পরিষ্কার করা হয় নতুন এই জেলাখানাটির ফাঁসির মঞ্চ। বালির বস্তা ঝুলিয়ে দড়ির ভার বহনের ক্ষমতাও দেখা হয়। সবই অত্যন্ত গোপনে, ঘোষণা ছাড়া। শুক্রবার সন্ধ্যায় লকডাউনের মধ্যে মাজেদের পরিবারের লোকেদের শেষ সাক্ষাতের জন্য কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে শনিবার তাঁর প্রাণদণ্ড কার্যকর করা হল।
১৯৭৫-এর ১৫ অগস্ট অভ্যুত্থানকারী সেনারা শেখ মুজিবকে হত্যার পরে তাঁর ছোট ছেলে শেখ রাসেল ভয় পেয়ে মাজেদকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘‘মায়ের কাছে যাব!’’ জবাবে মাজেদ গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিলেন ১০ বছরের রাসেলকে। ওই বছর ২ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকে সেনাদের যে দলটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এবং তিন মন্ত্রী মহম্মদ মনসুর আলি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং মহম্মদ কামরুজ্জামানকে হত্যা করেছিল, মাজেদ তাতেও ছিলেন। ২০০৯-এর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট মাজেদ-সহ ১২ জনের ফাঁসির রায় বহাল রাখে। তার পরে ২৩ বছর তিনি ভারতে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বলে পুলিশের দাবি।