প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন যাত্রীরা। ট্রেন এল। থামল। হঠাৎ একটি কামরা থেকে কুড়ুল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এক জন। সামনে যাঁকে পেলেন, তাঁকেই কোপ। একের পর এক যাত্রীর উপরে নেমে এল বেমক্কা আঘাত। কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে কেউ বুঝেই উঠতে পারেছেন না। প্ল্যাটফর্ম জুড়ে তত ক্ষণে চাপ চাপ রক্ত। আতঙ্কে চিৎকার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জার্মানির ডুসেলডর্ফের সেন্ট্রাল স্টেশনে এমনই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে হয়েছে যাত্রীদের।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জখম হয়েছেন অন্তত ৯ যাত্রী। ৩৬ বছরের যে ব্যক্তি কুড়ুল নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন, তাঁকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের ধারণা, ফাতমির এইচ নামে ওই যুবক মানসিক ভাবে সুস্থ নন। জঙ্গি-যোগের
সম্ভাবনা এই মুহূর্তে অন্তত খুঁজে পাওয়া যায়নি। আততায়ী আদতে কসোভোর বাসিন্দা। জার্মানির উপারটাল শহরে এখন থাকেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মুহূর্তের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে জখম করে ফেললেও পুলিশের কম্যান্ডো বাহিনী তাঁকে ধরে ফেলে। যদিও পুলিশ এসেছে বুঝতে পেরেই রেললাইন ধরে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। স্টেশন থেকে পালিয়ে তিনি কাছাকাছি একটি সেতু থেকে ঝাঁপ দেন। তাতে মারাত্মক জখমও হন। হাড়গোড় ভেঙে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশের ধারনা, লোকটি একাই হামলার পরিকল্পনা করে। পুলিশকে তিনি পরে জানিয়েছেন, হামলা চালানোয় তাঁর ধারণা হয়েছিল তাঁকে গুলি করে মারা হবে। গত কয়েক মাসে বার বার জঙ্গি হামলার কবলে পড়তে হয়েছে এই দেশকে। গত ডিসেম্বরেই ট্রাক ছিনতাই করে বার্লিনের ক্রিসমাস মার্কেটে হানা দিয়েছিল আইএস জঙ্গিরা। পিষে মেরেছিল ১২ জনকে। জার্মানির নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, দেশে অন্তত ১০ হাজার গোঁড়া মুসলিম বাস করেন বলে তাদের কাছে খবর। এঁদের মধ্যে ১৬০০ জনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে বলে তারা জেনেছে।