রাফাহ্র সেই বহুতলের ধ্বংসাবশেষে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক প্যালেস্টাইনি শিশু, যেখানে অভিযান চালিয়ে দুই বন্দিকে উদ্ধার করে ইজ়রায়েল সেনা। ছবি: এপি।
গাজ়ার রাফাহ্তে হামাসের ডেরায় ঢুকে তাদের হাতে বন্দি দু’জনকে ছাড়িয়ে আনল ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী। সোমবার ভোররাতে নাটকীয় অভিযান চালায় তারা। ছোড়ে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। হামাসের হাতে এখন ইজ়রায়েলের ১০০ জন বন্দি রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। দু’জন বন্দিকে ছাড়িয়ে আনার পর ইজ়রায়েলে উদ্যাপনও হয়েছে।
সেই অভিযানে প্রাণ হারালেন প্যালেস্টাইনের অন্তত ৬৭ জন বাসিন্দা। দাবি করেছে প্যালেস্টাইনি স্বাস্থ্যকর্তা। মৃতদের মধ্যে বহু মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। ইজ়রায়েল সেনার লাগাতার হামলায় গাজ়া ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন ১৪ লক্ষ প্যালেস্টাইনি। প্রসঙ্গত, রবিবারই হোয়াইট হাউস জানায়, ইজ়রায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। জানিয়েছেন, রাফাহ্তে সাধারণ মানুষকে উদ্ধারের পরিকল্পনা ছাড়া অভিযান চলবে না। গাজ়ার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইজ়রায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ২৮ হাজার ১৭৬ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ হাজার ৩০০ জন শিশু এবং কিশোর-কিশোরী। যদিও ইজ়রায়েলের দাবি, তারা হাজার হাজার হামাস যোদ্ধাকে নিকেশ করেছে।
ইজ়রায়েল সেনার মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানিয়েছেন, রাফাহ্র একটি বহুতলের তৃতীয় তলে রাখা ছিল ওই দু’জনকে। পাহারায় ছিল হামাসের সশস্ত্র রক্ষীরা। তাদের মোকাবিলা করে সোমবার রাত ১টা ৪৯ মিনিট নাগাদ দু’জনকে ছাড়িয়ে আনা প্রথমে দুই পণবন্দিকে আড়াল করেন জওয়ানেরা। তার পরে হামাস যোদ্ধাদের উপর হামলা চালায়। পণবন্দিদের তুলে বিমানে চাপিয়ে মধ্য ইজ়রায়েলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে শেবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁদের। দু’জনই সুস্থ রয়েছেন বলে খবর। হাগারি জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সূত্রে খবর সংগ্রহ করে এই উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর ফলে ইজ়রায়েলি সেনার মনোবল বৃদ্ধি পাবে। প্রসঙ্গত, এই রাফাহ্ এখনও নিজেদের দখলে রেখেছে হামাস।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, বন্দি দু’জনের নাম ফার্নান্দো সিমন মারমান এবং লুই হার। এক জনের বয়স ৬০ বছর। এক জনের বয়স ৭০ বছর। গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল হামাস। পণবন্দি করেছিল প্রায় ২৫০ জনকে। কিবুৎজ় নির ইৎজ়াখ থেকে ওই দু’জনকে আটক করেছিল হামাস। ওই দিন হামাসের হামলায় অন্তত ১,২০০ জন ইজ়রায়েলি মারা গিয়েছেন বলেও দাবি করে সে দেশের সরকার।