মন্ত্রী ইজাজ আহমেদ শাহের মন্তব্যে অস্বস্তি বাড়ল ইমরানের। —ফাইল চিত্র।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা পাকিস্তান। এ বার তা মেনে নিলেন খোদ ইমরান খানের মন্ত্রী-ই। জানিয়ে দিলেন, বিশ্বের কোনও দেশই তাঁদের কথায় আমল দিচ্ছে না। সকলে শুধু ভারতের কথাই শুনছে। তাই আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন জোগাড় করতে একেবারে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার জম্মু কাশ্মীর প্রসঙ্গে সে দেশের হম নিউজ চ্যানেলের মুখোমুখি হন পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার ইজাজ আহমেদ শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানালাম ভারত কার্ফু জারি করে কাশ্মীর অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ওষুধপত্রও পাচ্ছেন না উপত্যকার মানুষ। কিন্তু আমাদের বিশ্বাসই করছে না আন্তর্জাতিক মহল। ভারতের উপরই আস্থা ওদের।’’
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতকে কৌশলে বিপাকে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জে সেই মর্মে ডসিয়ারও জমা দিয়েছে তারা। তাতে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর মন্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার খর্ব হচ্ছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তৃতা করবেন ইমরান খানও। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর হাঁকডাক শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ৫৮টি দেশ ইসলামাবাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে বলে দাবি তাঁর। কিন্তু ইজাজ আহমেদ শাহ আসল ছবিটা তুলে ধরায়, বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রিয়াধের রাস্তায় শরীর-ঢাকা পোশাক ছাড়া মহিলা, হাঁ করে তাকিয়ে দেখলেন মানুষ
আরও পড়ুন: শরণার্থী রুখতে ট্রাম্পকে ‘অনুমতি’ সুপ্রিম কোর্টের
তবে শুধু এখানেই থামেননি ইজাজ আহমেদ শাহ। কুখ্যাত জঙ্গি হাফিজ সইদ নেতৃত্বাধীন জামাত-উদ-দাওয়া সংগঠনকে কোটি কোটি টাকা ঢালার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক চাপে এ বছরই ওই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করেছে ইসলামাবাদ। তা নিয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘জামাত-উদ-দাওয়ার উপর কোটি কোটি টাকা ঢেলেছি আমরা। নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের সদস্যদের বোঝাতে হবে। মূলস্রোতে ফেরাতে হবে সকলকে।’’
জামাত-উদ-দাওয়া আসলে লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন বলে দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছিল ভারত। ২৬/১১ মুম্বই হামলার পর তাতে সিলমোহর দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জও। আগামী সপ্তাহে আন্তর্জাতিক আর্থিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর বৈঠকে পাকিস্তানের ভাগ্য নির্ধারণ হবে। সন্ত্রাসে মদত জোগানো এবং সন্ত্রাস দমনে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে, সেখান পাকাপাকি ভাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে পাকিস্তানকে। তার আগে জামাত-উদ-দাওয়াকে আর্থিক মদত জোগানোর কথা প্রকাশ্যে এনে সরকারের বিড়ম্বনা বাড়িয়েছেন ইজাজ আহমেদ শাহ।