পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পরে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানালেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সংঘাতের আবহে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।’’
জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিলের জঙ্গিহানায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার দায়ও এড়িয়েছেন শাহবাজ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা যে কোনও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।’’ প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও-কাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পাঁচ দফা পদক্ষেপের পর বৃহস্পতিবার শাহবাজের সভাপতিত্বে পাক জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক হয়েছিল। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাওয়াজ়া আসিফ পহেলগাঁও সন্ত্রাসের দায় এড়ানোর পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারতের তরফে সামরিক পদক্ষেপ করা হলে ‘সর্বশক্তি দিয়ে প্রত্যাঘাতে’র।
এর পরেই পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির পাক সেনার নির্দিষ্ট কয়েকটি কোর এবং ইউনিটকে সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) এবং ভারত-পাক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সীমান্তের পাশাপাশি রাজধানী ইসলামাবাদ এবং সেনা সদর রওয়ালপিন্ডি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ১০ নম্বর কোরকেও বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন জেনারেল মুনির। অতীতে একাধিক সেনা অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া এই বাহিনীরই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উত্তরাংশের স্বশাসিত গিলগিট বালটিস্তান অঞ্চল। রওয়ালপিন্ডি-স্থিত ‘এয়ার ডিফেন্স কমান্ড’ এবং ‘স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড’ও সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি।
সাধারণ ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখায় নজরদারি এবং আইএসআই মদতপুষ্ট জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে পাক সেনার ১ নম্বর কোর। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মিরপুর জেলার মঙ্গলায় ওই বাহিনীর সদর দফতর। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা সন্ত্রাসের পরে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় বালাকোটের জঙ্গিশিবিরে হানা দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার মিরাজ়-২০০০ যুদ্ধবিমান। সেই ঘটনা মাথায় রেখে গিলগিট বালটিস্তানের স্কার্ডু বায়ুসেনা ঘাঁটিতে বাড়তি ফাইটার জেট মোতায়েন করেছে পাক বিমানবাহিনী। সেই সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে মার্কিন ‘ট্যাকটিক্যাল এয়ার লিফ্টার’ সি-১৩০ই হারকিউলিস। গত ৭২ ঘণ্টায় জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি।