ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বলছে পশ্চিম ভূখণ্ডের জেনিন। ছবি: রয়টার্স।
ভবিষ্যতে গাজ়ার ‘নিরাপত্তার’ দায়িত্ব তাঁরা নেবেন বলে জানিয়েছিলেন ইজ়রায়েলের
প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু তাঁদের ‘মিত্র’ বলে পরিচিত আমেরিকার
বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সরাসরি বলে দিলেন, যুদ্ধ শেষের পরে গাজ়ায় যেন আর দখলদারি চালাতে না যায় ইজ়রায়েল। জো বাইডেন প্রশাসন চায়, একই সঙ্গে গাজ়া এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের শাসনভার থাকুক প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)-এর হাতে।
গাজ়া থেকে হামাসের শাসন উৎখাতের সম্ভাবনা নিয়ে ইজ়রায়েলের পাশাপাশি আরব দেশগুলির নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা চালাচ্ছে আমেরিকা। ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য, সংঘর্ষ শেষের পরে কিছুটা সময় লাগবে গুছিয়ে ওঠা, একটা বদলের জন্য। কিন্তু তার পরে যেন আর কোনও পুনর্দখল যেন না হয়। টোকিয়োতে সাংবাদিক বৈঠকে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘‘গাজ়ায় আর কোনও অবরোধ বা দখলের চেষ্টা যেন না হয়। গাজ়া ভূখণ্ডের এলাকা যেন না কমে যায়। প্যালেস্টাইনি জনগোষ্ঠীকে উৎখাত করা যেন না হয়। আমরা আগেও বলেছি, গাজ়া এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে যেন একই শাসন থাকে। শেষ পর্যন্ত যেন একটিই প্যালেস্টাইনি রাষ্ট্র হয়।’’
জি৭ গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিতে টোকিয়ো গিয়েছেন আমেরিকান বিদেশসচিব। সেই বৈঠকেও সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইজ়রায়েলের বন্ধু রাষ্ট্র হওয়ায় প্যালেস্টাইনিদের উপরে হামলা নিয়ে আরব দুনিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের চাপের মুখে পড়েছে আমেরিকা। অপহৃতদের ছাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে কাতারে বৈঠক করেছেন আমেরিকার সিআইএ এবং ইজ়রায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের প্রধান। গাজ়ার পাশাপাশি ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও ইজ়রায়েলি হামলা চলছে। সেখানকার জেনিনের একটি শরণার্থী শিবিরে ইজ়রায়েলের বোমাবর্ষণে অন্তত ৯ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। হামাসের সশস্ত্র বাহিনী গাজ়ার রাস্তায় তাদের সঙ্গে ইজ়রায়েলি বাহিনীর লড়াইয়ের ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। আবার ইজ়রায়েলি বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, গাজ়ায় হামাসের তৈরি অন্তত দেড়শো সুড়ঙ্গ নষ্ট করেছে তারা।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বলেছেন, ‘‘মানুষকে ঢাল করে হামাস তো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেই। কিন্তু সামরিক অভিযানে এত সাধারণ মানুষের মৃত্যুর অর্থ, কোথাও গুরুতর কোনও গলদ আছে। এর ফলে সারা দুনিয়ার জনমতের মুখে ইজ়রায়েলের কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ নেতানিয়াহু সরকার অবশ্য নিজেদের ‘মানবিক’ মুখ তুলে ধরতে সচেষ্ট। যুদ্ধে প্রাণ হারানো ইজ়রায়েলি সেনা বা সাধারণ নাগরিক যুবকদের শেষকৃত্যের আগে তাঁদের শুক্রাণু সংগ্রহ করে রাখার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে পরিবারকে। এর জন্য যাবতীয় নিয়মকানুনের বাধা আপাতত তুলে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে এ ভাবেই ৩৩ জন নিহত ইজ়রায়েলি যুবকের শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়েছে।