ইউক্রেনের পাশে একজোট ইউরোপ
Trump-Zelensky Clash

বৈঠকের ব্যর্থতার দায় জ়েলেনস্কির: আমেরিকা

সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের আগেই জানানো হয়েছিল যে শুক্রবারের বৈঠকে মূলত খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৫ ০৭:৪২
Share:

(বাঁ দিকে) ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ওভাল অফিসে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত বাদানুবাদ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে চর্চা চলছে। তার মধ্যেই জানা গেল, ওভাল অফিসে তাঁর আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিকে আগেই সতর্ক করেছিলেন হোয়াইট হাউসের আধিকারিকেরা। সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের আগেই জানানো হয়েছিল যে শুক্রবারের বৈঠকে মূলত খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অর্থনৈতিক অংশীদারির বিষয়টি পোক্ত হলে তার পরে ধাপে ধাপে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইউক্রেনের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাঁদের মতে, জ়েলেনস্কি তা মানেননি। শুরুতেই তিনি আমেরিকান সাহায্য এবং যুদ্ধে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে তাঁর হতাশা জানিয়েছেন। ওই বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ফলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। জ়েলেনস্কিকে সেনেটরেরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, বৈঠকে ট্রাম্পের প্রশংসা করতে। সমঝোতার মনোভাব নিয়ে জ়েলেনস্কি যেন আলোচনায় বসেন, সে কথাও বলে দিয়েছিলেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও বৈঠকে একরোখা মেজাজেই দেখা গিয়েছে জ়েলেনস্কিকে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা সেনেটর জেডি ভান্সের সঙ্গে যুদ্ধ-বিরতি নিয়ে তরজায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। সে দিনের বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার দায় পুরোপুরি জ়েলেনস্কির উপরে চাপিয়েছে আমেরিকা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে অবশ্য ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের বাকি দেশগুলি। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে শান্তি ফেরাতে কূটনীতির উপরে ভরসা রাখছে তারা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মার জানিয়েছেন, সংঘর্ষ-বিরতির জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করতে আজ লন্ডনে বৈঠক করেছেন ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রনায়ক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা। বাকিংহাম প্রাসাদের অদূরে ঐতিহাসিক ল্যাঙ্কেস্টার হোটেলে আয়োজিত ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন ইউরোপের নানা দেশের ডজন খানেক প্রতিনিধি, নেটো এবং ইউরোপীয় কমিশনের সদস্যেরাও। স্টার্মার জানান, খুব তাড়াতাড়ি ওই প্রস্তাব আমেরিকার কাছে পেশ করা হবে। তাঁর মতে, ট্রাম্পও চান ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ফিরুক। সেই শান্তি বজায় রাখতে আমেরিকার সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি, শনিবারের একটি বৈঠকে ব্রিটেনের তরফে ইউক্রেনকে ২২৬ কোটি পাউন্ড ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা পাকা হয়েছে। কিভ সূত্রের খবর, শনিবার লন্ডনে পৌঁছে সেই চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন জ়েলেনস্কি।

ইউক্রেনের হাত শক্ত করার পাশাপাশি ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে স্টার্মার ইউরোপের দেশগুলিকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। আজ বৈঠকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইউক্রেন, আমরা তোমার পাশে রয়েছি। তার জন্য যত দূর যেতে হয় যাব। ...ইউক্রেনের জন্য ভাল কিছু করতে আমাদের সকলকে এক জোট হতে হবে। ইউরোপের নিরাপত্তা তথা আমাদের যৌথ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।’’ প্রসঙ্গত তাৎপর্যপূর্ণ, রবিবারের বৈঠকে ডাউনিং স্ট্রিটে এসেছিলেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী তথা ট্রাম্প-বন্ধু বলে পরিচিত জর্জিয়া মেলোনি। যৌথ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে নেন। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি ঠিক করতে ইউরোপ-আমেরিকার মধ্যে একটি জরুরি বৈঠক ডাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেখানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মেলোনি।

Advertisement


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement