Donald Trump

‘পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে ট্রাম্পের ঘুষ’

কোনও আমেরিকান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম ফৌজদারি মামলা এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখন যে ক’টি মামলা চলছে সেগুলির মধ্যে এটি প্র‌থম জুরি পর্যায়ে পৌঁছল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৪৮
Share:

ম্যানহাটনের আদালত চত্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার। ছবি: রয়টার্স।

পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ করতে ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে তাঁকে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের এক জেলা আদালতে সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু হল।

Advertisement

কোনও আমেরিকান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম ফৌজদারি মামলা এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখন যে ক’টি মামলা চলছে সেগুলির মধ্যে এটি প্র‌থম জুরি পর্যায়ে পৌঁছল। গত কাল শুনানির শুরুতেই সরকারি আইনজীবী ম্যাথু কোল্যানগেলো আদালতকে জানান, এটি আসলে কোনও সাধারণ ঘুষ মামলা নয়। পর্ন তারকাকে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার ডলার ঘুষ দিয়ে আদতে ২০১৬-র নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, সে বছরই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প।

কিন্তু ম্যাথুর যুক্তি খণ্ডন করে ট্রাম্পের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, নির্বাচনে প্রভাব ফেলার প্রশ্ন নয়, আদতে নিজের পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কারণ ট্রাম্প চাননি কোনও পর্ন তারকার সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসুক। তাতে তাঁর পরিবারের সম্মানহানি হত। ২০০৬ সালে স্টর্মির সঙ্গে ট্রাম্পের যৌন সম্পর্ক হয়েছিল বলে খবর রটে। সে কথা যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সে জন্য ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্টর্মিকে একটি চুক্তিতে সই করানো হয়েছিল। মুখ বন্ধ রাখার জন্য দেওয়া হয়েছিল বিপুল অর্থও। কিন্তু সেখানেও ব্যাঙ্কের নথি জাল করা এবং ট্রাম্পের পারিবারিক সম্পত্তির হিসেবে গোলমাল দেখানোর অভিযোগ ওঠে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সরকারি কৌঁসুলি আদালতে বলেছেন, ‘‘২০১৬-র ভোট প্রভাবিত করার জন্য এটি ছিল দীর্ঘ দিনের পরিকল্পিত ও সংগঠিত একটি ষড়যন্ত্র।’’ তাঁর আরও ব্যাখ্যা, ওই ভোটে যাতে রিপাবলিকান ভোটারদের সামনে ট্রাম্পের সঙ্গে পর্ন তারকার সম্পর্কের কথা জানাজানি না হয়, বরাবর তার চেষ্টাই করে এসেছেন ট্রাম্প।

গত কাল নেভি ব্লু স্যুট, সাদা শার্ট আর নীল টাই পরিহিত ট্রাম্পকে জুরির সামনে অবিচল বসে থাকতে দেখা যায়। আগেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অন্তত ৩৪ দফা অভিযোগের সব ক’টিই অস্বীকার করে এসেছেন ট্রাম্প। মাঝে মধ্যে নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে অল্প কথা বলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আদালত কক্ষে প্রবেশের আগে নিজের সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলেনর বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, খুবই অল্প সংখ্যক ট্রাম্প সমর্থক ম্যানহাটনের আদালতের বাইরে জড়ো হয়েছেন। এর জন্যও বাইডেন প্রশাসনের নিরাপত্তার কড়াকড়িকে দুষেছেন ট্রাম্প।

প্রাক্তন এই আমেরিকান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল (যে বছর জয়ী হন জো বাইডেন) উল্টে দেওয়ার প্রচেষ্টা ও হোয়াইট হাউসের প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বহু নথি নিজের ব্যক্তিগত হেফাজতে রাখার অভিযোগও উঠেছে। সেই মামলাগুলিও আদালতের বিচারাধীন। এ বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও রিপাবলিকানদের প্রার্থী ট্রাম্পই। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ঘুষ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেও দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে বাধা থাকবে না তাঁর। কিন্তু ফৌজদারি মামলায় দোষী কোনও প্রার্থীকে আমেরিকার মানুষ নিজেদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে। তা ছাড়া, বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন এই ঘুষ মামলার শুনানি দীর্ঘ সময় ধরে চলবে। ফলে ট্রাম্পের এ বছরের নির্বাচনী প্রচার তাতে অনেকটাই ধাক্কা খেতে চলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement