ছন্দে ফেরা তো দূরের কথা, এখনও জলমগ্ন হিউস্টনের বহু এলাকা। ত্রাণ শিবির থেকে ঘরে ফেরা হয়নি অনেকেরই। বিদ্যুৎ নেই, অন্ধকারে ডুবে রাস্তাঘাট। এরই মধ্যে হার্ভে-ত্রাস কাটতে না কাটতে ফের কুণ্ডলী পাকাচ্ছে নয়া আতঙ্ক— ‘ইরমা’।
বুধবারই পূর্ব অতলান্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাকে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই হাওয়ার গতিবেগ বাড়িয়ে ফুলেফেঁপে ‘ক্যাটেগরি-থ্রি’ ঝড়ের চেহারা নিয়েছে ইরমা, জানাচ্ছে ‘ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার’। ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ছুটে আসছে সে। আবহবিদদের আশঙ্কা, পূর্ব অতলান্তিকের ‘কেপ ভেরডে’ দ্বীপপুঞ্জের কাছে তৈরি হওয়া ঝড়টি আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে (সম্ভবত মঙ্গলবার) আছড়ে পড়তে পারে দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে। প্রথম আছড়ে পড়বে পুয়ের্তো রিকোর উপর। আর তত দিনে হয়তো হার্ভের মতোই ‘ক্যাটেগরি-ফোর’ হারিকেনের চেহারা নেবে সে, হয়তো বা হার্ভের থেকেও ভয়াবহ। তাই আগেভাগে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
মার্কিন আবহবিদ ইভান মেয়ারের কথায়, ‘‘সত্যিই যদি ইরমা ক্যাটেগরি-ফোর আকার নেয় এবং আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে আছড়ে পড়ে, তা হলে ১০০ বছরে এই প্রথম এক বছরে দু’বার প্রকৃতির এমন রুদ্র তাণ্ডবের সাক্ষী হবে মার্কিন মুলুক।’’
এ দিকে, হার্ভের দাপট সামলাতে গিয়ে এখনও নাকানিচোবানি দশা প্রশাসনের। টেক্সাসের কর্সবির রাসায়নিক চুল্লিতে পরপর বিস্ফোরণ নিয়ে আতঙ্ক কাটছে না এখনও। শহরবাসীকে চাঙ্গা করতে হিউস্টনের মেয়র সিলভেস্টার টার্নার আজ বলেন, ‘এ বার কাজকর্ম শুরু করা যাক’। তাঁর দাবি, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ত্রাণশিবির থেকে ঘরে ফিরেছেন অনেকেই। ট্রাফিক ব্যবস্থাও ক্রমশ ঠিকঠাক হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পুনর্বহাল করা হয়েছে। কিন্তু হিউস্টনের সামান্য উন্নতি হলেও দক্ষিণপূর্ব টেক্সাসের বড় অংশ এখনও জলের তলায়। খাবার-পানীয় জল নেই। আকাশ ছুঁয়েছে পেট্রোলের দাম। আগামিকাল ইদ। উৎসব ভুলে হিউস্টনের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের কমিউনিটি সেন্টারগুলো খুলে দিয়েছে শরণার্থীদের জন্য। ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে জামাকাপড়-পানীয় জল। আজ হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডার্স জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজের পকেট থেকে ১০ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য দিতে চান টেক্সাস ও লুইজিয়ানাবাসীকে। কী ভাবে সাহায্য করলে সব চেয়ে ভাল হয়, তা নিয়েও বাসিন্দাদের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।