মেরুভালুক এমন হাড় জিরজিরে! উদ্বেগে বিশ্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মেরু অঞ্চলে বরফ গলছে। ইতিমধ্যেই সেখানকার প্রাণীরা বড় ধরনের সঙ্কটে পড়েছে বলে বার বার সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। উত্তর মেরু অঞ্চলের পরিস্থিতির ছবি তুলতে সেখানে গিয়েছিলেন নেচার ফোটোগ্রাফার ও জীববিশেষজ্ঞ পল নিকলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৬
Share:

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এই ছবিটিই।

কখনও কখনও একটি ছবি কোনও বড় সঙ্কটের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। ইরাকের যুদ্ধে বাবা-মায়ের মৃত্যুর পরে একটি শিশুর কান্না বা সুদানে দুর্ভিক্ষের সময়ে শিশুর পিছনে শকুনের ঘুরে বেড়ানো। তেমনই হাড় জিরজিরে এক মেরুভালুকের ভিডিও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বের টনক ফের নড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মেরু অঞ্চলে বরফ গলছে। ইতিমধ্যেই সেখানকার প্রাণীরা বড় ধরনের সঙ্কটে পড়েছে বলে বার বার সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞেরা। উত্তর মেরু অঞ্চলের পরিস্থিতির ছবি তুলতে সেখানে গিয়েছিলেন নেচার ফোটোগ্রাফার ও জীববিশেষজ্ঞ পল নিকলেন। কানাডার সমারসেট দ্বীপে একটি মেরু ভালুককে দেখে চমকে ওঠেন নিকলেন ও তাঁর সহযোগীরা। লোম ঝরে গিয়েছে তার। চেহারাও একেবারে রোগা। একটা মরচে ধরা খাবারের কৌটোয় খাবার খুঁজছিল ভালুকটা। পরে একটা পড়ে থাকা স্নোমোবিল গাড়ির সিট চিবোতে শুরু করে। ৪০০ ফুট দূর থেকে ভালুকটির ভিডিও তোলেন নিকলেন ও তাঁর সহযোগীরা।

নিকলেন জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই বিশেষ ভালুকটির খাদ্যের অভাব হয়েছে কি না তা তাঁর জানা নেই। তবে মেরুভালুক ক্ষুধার্ত হলে তার চেহারাটা কেমন হয় সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। ওই এলাকারই ব্যাফিন দ্বীপে নিকলেনের বাড়ি। তাঁর কথায়, ‘‘এমন অবস্থায় কোনও ভালুককে কখনও দেখিনি।’’ নিকলেন ও ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’ পত্রিকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ভালুকটির ছবি প্রকাশের পরে হইচই পড়ে যায়। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, মেরুভালুক ক্রমশ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠছে। ২০১৫ সালেও একটি ক্ষুধার্ত ভালুকের ছবি নিয়ে হইচই হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রচারে একটি মেরু ভালুকের কার্টুন ব্যবহার করেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাল গোর।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে মেরু এলাকার বরফ গলছে। ফলে মেরুভালুকের বাসস্থান ও শিকারের এলাকা কমছে। একটি মেরু ভালুকের প্রতি সপ্তাহে একটি সিলের মাংসের সমান খাদ্যের প্রয়োজন হয়। খাদ্যের অভাব ঘটলে মেরু ভালুকেরা ওই এলাকায় (আর্কটিক সার্কল) বসবাসকারী মানুষের বসতিতেও হানা দিতে পারে।

ইনস্টাগ্রামে নিকলেনের ভিডিও-র দর্শকদের একাংশের অবশ্য দাবি, বয়স হলেও ভালুকের চেহারা খারাপ হয়ে যায়। আমেরিকার ওরেগন চিড়িয়াখানার অধিকর্তা এবং মেরু ভালুক বিশেষজ্ঞ ডোনাল্ড মুর জানিয়েছেন, ওই ভিডিও দেখে ভালুকটির বয়স বোঝার উপায় নেই। তবে পরিবেশ পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব যে মেরুভালুককে সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা মেনে নিয়েছেন তিনিও। নিকলেনকে অনেকে বলেছেন, ‘‘শুধু ভিডিও তুলেই ছেড়ে দিলেন। ভালুকটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেন না।’’ তাঁর জবাব, ‘‘আমরা তো আর ২০০-৩০০ পাউন্ড সিলের মাংস নিয়ে মেরু অ়ঞ্চলে ঘোরাঘুরি করি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement