এক কাফেতে বিস্ফোরণ ঘটে মৃত্যু হল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থক সেনা-ব্লগার ভ্ল্যাডলেন তাতারস্কির। ছবি: সংগৃহীত।
রবিবার সন্ধ্যায় সেন্ট পিটার্সবার্গের এক কাফেতে বিস্ফোরণ ঘটে মৃত্যু হল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমর্থক সেনা-ব্লগার ভ্ল্যাডলেন তাতারস্কির। ঘটনায় ২৪ জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এর মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হামলার পিছনে কে বা কারা রয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনকে বরাবরই সমর্থন করে এসেছেন তাতারস্কি। তাঁর মৃত্যুতে ইউক্রেনের দিকে উঠছে আঙুল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোল্যাকের মতে, ‘‘এটি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব।’’ তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘একটা কাচের শিশিতে অনেকগুলো মাকড়সা একে অপরকে খাচ্ছে।’
তাতারস্কির মৃত্যুকে ‘হাই প্রোফাইল’ খুনের মামলা ঘোষণা করেছে রাশিয়া সরকার। অপরাধ-বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল থেকে সূত্র খুঁজছেন। দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত কাল সন্ধ্যায় ওই কাফেতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে প্রধান বক্তা হিসেবে নিমন্ত্রিত ছিলেন তাতারস্কি। রুশ অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, সন্ধে ৬টা বেজে ১৩ মিনিট নাগাদ পুলিশের কাছে ফোন আসে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। রুশ সরকারি মিডিয়া সূত্রে খবর, তাতারস্কিকে একটি মূর্তি উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে বোমা ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তাতারস্কিকে একটি মূর্তি উপহার দেওয়া হচ্ছে।
রাশিয়ায় তাতারস্কির মতো আরও অনেক সেনা ব্লগার রয়েছেন। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র গিয়ে সেখান থেকে ব্লগ করতেন তাতারস্কি। টেলিগ্রাম নামক সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ৫ লক্ষেরও বেশি ফলোয়ার। গত বছর ক্রেমলিনের ভিতরে একটি ভিডিয়ো করে তাতে বলেছিলেন, ‘‘আমরা সবাইকে হারিয়ে দেব। সবাইকে মেরে ফেলব, প্রয়োজনে সবার থেকে সব কিছু ছিনিয়ে নেব। কারণ আমাদের এটা ভাল লাগে।’’ এর পরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ক্রেমলিনে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন খোদ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের একাংশ দখল করে সেখানে গণভোট করার সাফল্য উদ্যাপনে ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। তাতে নিমন্ত্রিত ছিলেন তাতারস্কি। তখনই ওই ভিডিয়োটি তৈরি করেছিলেন।
সেন্ট পিটার্সবার্গ পুতিনের শহর। এই শহর থেকে রাজনৈতিক মুখ হয়ে উঠে এসেছিলেন তিনি। সেখানে প্রেসিডেন্ট-সমর্থকের মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই হইচই পড়ে গিয়েছে। সমাজমাধ্যমে রুশ তথ্য-বাহিনী নামে পরিচিত একটি দল ‘সাইবার ফ্রন্ট জ়েড’ টেলিগ্রামে লিখেছে, ‘‘এটা সন্ত্রাস হামলা। আমরা যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছিলাম। কিন্তু তা হয়তো যথেষ্ট ছিল না।’’ তাতারস্কির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে তারা বলেছে, ‘‘উনি অসাধারণ যুদ্ধ-সাংবাদিক ছিলেন।’’