—প্রতীকী চিত্র।
তার পরিচয় ঠিক কী হওয়া উচিত, জানা নেই। সে গ্রহও নয়, নক্ষত্রও নয়। তবে গ্রহের মতোই একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে সে। তার উত্তাপ সূর্য-পৃষ্ঠের থেকেও বহু গুণ বেশি! বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে ছড়িয়ে রয়েছে নানা রহস্য। তবু প্রায় ১৪০০ আলোকবর্ষ দূরের এই মহাজাগতিক বস্তুটিকে চাক্ষুষ করে হতচকিত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
ছোটখাট চেহারার বাদামী রঙের বস্তুটির পরিচয় বর্তমানে নক্ষত্র ও গ্রহের মাঝামাঝি কিছু। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বস্তুটির সঙ্গে তার নক্ষত্রের দূরত্ব একেবারেই কম। কক্ষপথ তারার এত কাছে, যে এর উত্তাপ ৮০০০ কেলভিন অর্থাৎ ৭৭২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। এতটাই গরম যে এর অণুগুলি স্থির অবস্থায় থাকতে পারে না, ভেঙে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় ‘বায়ুমণ্ডলে’। সৌরপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫৭৮৮ কেলভিন। বিজ্ঞানীদের মতে, নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণকারী এত উত্তপ্ত ‘গ্রহের’ খোঁজ আগে কখনও মেলেনি।
এই অনুসন্ধান পর্বের সঙ্গে যুক্ত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন ইজ়রায়েলের ‘ওয়েজ়ম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী নামা হালাকোন। তিনি মহাজাগতিক বস্তুটির নাম দিয়েছেন ‘ডব্লিউডি০০৩২-৩১৭বি’। এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হতে চলেছে ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে।
বিজ্ঞানী দলটি জানিয়েছে, এই আবিষ্কারের সূত্রে বৃহস্পতির মতো দৈত্যাকার উত্তপ্ত গ্যাসীয় পিণ্ডকে বোঝা সম্ভব হবে। প্রকাণ্ড নক্ষত্রের চরিত্র বিশ্লেষণ করা যাবে। যে সব গ্রহ নক্ষত্রের একেবারে কাছে থেকে প্রদক্ষিণ করে, তাদের প্রবল অতিবেগুনী রশ্মির সম্মুখীন হতে হয়। এর জেরে এ ধরনের গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ‘বাষ্পীভূত’ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়, অণুগুলি স্থায়ীত্ব পায় না, ভেঙে যায়। এ ধরনের প্রতিকূল পরিবেশ সম্পর্কে যে স্বল্প তথ্য রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম কেইএলটি-৯বি। সাম্প্রতিক কালে এই এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরপরিবারের বাইরে থাকা কোনও গ্রহ) সম্পর্কে জানা গিয়েছে। এর তারার দিকে থাকা অংশের তাপমাত্রা ৪৬০০ কেলভিন, যা বহু নক্ষত্রপৃষ্ঠের থেকে বেশি উত্তপ্ত। কিন্তু নক্ষত্র-সঙ্গী ‘ডব্লিউডি০০৩২-৩১৭বি’ সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।