Indianapolis

উনিশের তরুণের গুলিতে হত ৪ ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিখ-সহ ৮, আমেরিকায় ফের প্রশ্নে অস্ত্র আইন

এ বছর ১৬ মার্চ থেকে ইন্ডিয়ানাপোলিসের ঘটনা নিয়ে গত এক মাসে আমেরিকায় ৪৫টি বন্দুকবাজ হামলার ঘটনা ঘটল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইন্ডিয়ানাপোলিস শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ১২:১৭
Share:

বাঁ দিকে, ব্র্যান্ডন হোল। ডান দিকে, ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

ক্ষমতায় এসেই অস্ত্র আইন কঠোর করতে উদ্যোগী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আদৌ তার বাস্তবায়ন হবে কি না তা নিয়ে যদিও প্রশ্ন রয়েছে। তার মধ্যেই আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজ হামলা। এ বার ইন্ডিয়ানাপোলিসে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণের গুলিতে প্রাণ হারালেন ৮ জন, যার মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অমরজিত জোহাল (৬৬), জসবিন্দর কউর (৬৪), অমরজিত সখোঁ (৪৮) নামের ৩ শিখ মহিলা এবং জসবিন্দর সিংহ (৬৮) নামের ১ শিখ ব্যক্তিও শামিল। গুরুতর জখম অবস্থায় আরও ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি। এর মধ্যে ১ জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। হামলাকারী নিজেও ঘটনাস্থলে আত্মঘাতী হয়েছে।

Advertisement

গত ২২ মার্চ কলোরাডোর একটি দোকানে বন্দুকবাজের হামলায় ১০ জন প্রাণ হারান। তার পর এক মাসও কাটেনি ইন্ডিয়ানাপোলিসে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল, যাতে একসঙ্গে এত জন মানুষ প্রাণ হারালেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ সেখানে পণ্য সরবরাহকারী সংস্থা ফেডএক্স-এর দফতরে হামলা চালায় ব্র্যান্ডন হোল নামের এক তরুণ। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি থেকে নেমেই গুলি চালাতে চালাতে দফতরের ভিতরে ঢোকে ব্র্যান্ডন। দফতরের একেবারে ভিতর পর্যন্ত যদিও ঢুকতে পারেনি সে। কিন্তু মাত্র কয়েক মিনিটে সামনে যাঁকেই পেয়েছে, তাঁকেই লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সে। তাতেই ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।

ইন্ডিয়ানাপোলিস পুলিশ জানিয়েছে, ফেডএক্স-এর ওই দফতরের অধিকাংশ কর্মীই ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং তাঁদের মধ্যে সিংহভাগই শিখ। হামলার সময় ওই দফতরে ১০০-রও বেশি কর্মী ছিলেন। এলোপাথাড়ি গুলির শব্দে হুলস্থুল পড়ে যায় সেখানে। যে যেখানে পারেন মাথা বাঁচাতে ছুটে যান। খবর পেয়ে অন্তত ৩০টি গাড়ি ভর্তি পুলিশ সেখানে গিয়ে পৌঁছয়। কিন্তু ভিতরে ঢুকে ব্র্যান্ডনের নিথর দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। তাঁর শরীরে গুলির ক্ষত ছিল। হামলা চালানোর পর সে নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হয় বলেই ধারণা পুলিশের।

Advertisement

এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। নেটমাধ্যমে বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি লেখেন, ‘ইন্ডায়ানাপোলিসে বন্দুকবাজ হামলার ঘটনায় স্তব্ধ আমি। নিহতদের মধ্যে সেখানকার ভারতীয়-শিখ গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন। শিকাগোয় আমাদের কনস্যুলেট জেনারেল ইন্ডিয়াপোলিসের মেয়র এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। স্থানীয় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গেও কথা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সব রকমের সহযোগিতা করব আমরা’। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহও। নিহতদের পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

এ বছর ১৬ মার্চ থেকে ইন্ডিয়ানাপোলিসের ঘটনা নিয়ে গত এক মাসে আমেরিকায় ৪৫টি বন্দুকবাজ হামলার ঘটনা ঘটল। তাতে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি আরও জোরালো হচ্ছে সে দেশে। মার্চেই ব্র্যান্ডনের মা পুলিশের কাছে ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ানাপোলিসের পুলিশ। সেই সময় তার কাছ থেকে একটি শটগানও উদ্ধারও হয়। পরিবারের সম্মতিতে পুলিশের তরফেই মানসিক চিকিৎসা শুরু হয় তার। একদফা ব্র্যান্ডনকে জেরাও করে সে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। তবে সে কোনও কট্টরপন্থী সংগঠনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার পরেও পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে সে কী ভাবে অস্ত্র হাতে পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement