Ladakh

চিন সীমান্তে পাহারায় জোর

চিনের বিরুদ্ধে সরাসরি সরব না হলেও, কেন্দ্র চিনা সীমান্ত বরাবর ভারতের নিরাপত্তা মজবুত, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির উন্নয়নে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪১
Share:

চিন সীমান্তে আইটিবিপি-র ৯৪০০ জওয়ান নিয়োগ করা হবে। ফাইল ছবি।

লাদাখে চিনা সেনা ভারতের জমি দখল করে বসে রয়েছে বলে বিরোধীরা বার বার অভিযোগ তুলেছেন। লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের অভিযোগও উঠেছে।

Advertisement

চিনের বিরুদ্ধে সরাসরি সরব না হলেও আজ কেন্দ্র চিনা সীমান্ত বরাবর ভারতের নিরাপত্তা মজবুত, পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির উন্নয়নে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিল। চিন সীমান্তে আইটিবিপি-র ৯৪০০ জওয়ান নিয়োগ করা হবে। লাদাখে সেনা ও পণ্য পরিবহণে তৈরি হবে নতুন সুড়ঙ্গপথ। গলওয়ান উপত্যকায় জমি দখলের মতো চিন যে ভাবে একটু একটু করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দখলদারি বাড়াতে চাইছে, তা ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত বলে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা।

আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সিদ্ধান্ত, ভারত-চিন সীমান্তে নিরাপত্তার ভারপ্রাপ্ত আইটিবিপি-কে মজবুত করতে নতুন সাতটি ব্যাটেলিয়ন তৈরি করা হবে। যার অর্থ, ২০২৫-’২৬-এর মধ্যে চিন সীমান্তে ৯৪০০ জন জওয়ান নিয়োগ করা হবে। আইটিবিপি-র একটি নতুন সেক্টরের সদর দফতরও তৈরি হবে। লাদাখে দ্রুত সেনা মোতায়েন করতে জ়ান্সকার উপত্যকা থেকে লাদাখের সীমান্ত পর্যন্ত সড়ক দূরত্ব কমিয়ে আনতে ৪.১ কিলোমিটার দীর্ঘ শিঙ্কু লা সুড়ঙ্গপথ তৈরি হবে। ১৬৮১ কোটি টাকা খরচ করে ২০২৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যেই এই সুড়ঙ্গ-সড়ক তৈরি করে ফেলার লক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। বছরের যে কোনও সময়ে এই সড়কপথে সেনা বা পণ্য পরিবহণ করা যাবে। ইতিমধ্যেই মানালিতে অটল সুড়ঙ্গ চালু হয়েছে। তৈরি হচ্ছে জ়োজি লা। নিমু-পদম-দারচা রোডে এই সুড়ঙ্গপথ ধরে সব থেকে কম সময়ে লাদাখে পৌঁছোনো যাবে। আজ সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে জানান, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনার উপরে নজর রাখতে তৈরি করা হচ্ছে অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা।

Advertisement

একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত, লাদাখ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম ও অরুণাচলে চিন সীমান্ত বরাবর ১৯টি জেলার ২৯৬৬টি গ্রামে উন্নয়নের কর্মসূচি নেওয়া হবে। জীবিকা, রোজগার, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে অনেক সময়েই এই গ্রামের মানুষেরা অন্যত্র কাজের সন্ধানে চলে যান। তাতে চিনা সেনার সুবিধা হয়ে যায় বলে মনে করছে কেন্দ্র। মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী চার বছরে ৪৮০০ কোটি টাকা খরচ করে এই গ্রামগুলিতে উন্নয়নের কাজ হবে। এর মধ্যে ২৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে জাতীয় সড়কের সঙ্গে এই গ্রামগুলির যোগাযোগ তৈরিতে। মোবাইল ফোন সংযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে দিয়ে, পর্যটন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা ঢেলে গ্রামের মানুষদের জীবিকার বন্দোবস্ত করা হবে।

সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, ২০২০-তে গলওয়ানে সংঘাতের পর থেকেই সরকারের অন্দরমহলে চিন নিয়ে চিন্তা বেড়েছে। চিন যে ভাবে সীমান্তের ওপারে সামরিক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন করছে, তারই পাল্টা ভারতও পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছে। আজ কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “সীমান্তবর্তী গ্রামে উন্নয়ন হলে স্থানীয়েরা সেখানেই থাকতে উৎসাহ পাবেন।” আইটিবিপি-র নয়া সাতটি ব্যাটেলিয়ন নিয়ে কেন্দ্রের যুক্তি, আগেই চিন সীমান্ত বরাবর ৪৭টি সীমান্ত চৌকির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী নয়া ৭টি ব্যাটেলিয়ন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য এককালীন ১৮০৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বছরে ৯৬৩ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement