পাকিস্তানের সেনাঘাঁটিতে আত্মঘাতী হামলা। বিস্ফোরণস্থল পরীক্ষা করে দেখছেন এক জওয়ান। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সেনাঘাঁটিতে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। সে দেশের পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানি তালিবানের শাখা এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তরফে এখনও এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
পাকিস্তানি সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। আফগান সীমান্তের কাছেই রয়েছে ওই ঘাঁটি। এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘাঁটিতে তখন সকলে ঘুমিয়েছিলেন। আচমকা হামলা। অনেকেই সাধারণ পোশাক পরেছিলেন। সে কারণে মৃতেরা সকলে সেনাবাহিনীর সদস্য কি না, জানা যায়নি।
ওই সেনা আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, একটি স্কুলবাড়িতে অস্থায়ী সেনাশিবির তৈরি করা হয়েছিল। তার সামনে বোমাবোঝাই গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় স্কুলবাড়ির তিনটি ঘর ভেঙে পড়েছে। ওই ঘটনায় ২৭ জন আহত হয়েছেন। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। তবে সংখ্যাটা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে।
পাকিস্তানি তালিবানের নতুন শাখা সংগঠন তেহরিক-এ-জিহাদ পাকিস্তানের তরফে দায় স্বীকার করে জানানো হয়েছে, রাত আড়াইটে নাগাদ ‘শহিদ হওয়ার জন্য হামলা’ শুরু করেছেন এক জন। তার পর ওই চত্বরে হামলা শুরু করেন বাকিরা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ নিয়ে মুখ খোলেনি।
সাম্প্রতিক কালে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত আফগানিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায়। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবান। তার পর থেকে এই হামলার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে তালিবানের উত্থান দেখে কট্টরপন্থী সংগঠনগুলি অনুপ্রাণিত হয়েছে। সে দেশ থেকে আমেরিকা বাহিনী প্রত্যাহার করার পর জঙ্গিরা স্বাভাবিক ভাবেই অনেক বেশি সুবিধা পেয়েছে।
‘পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ়’ বলছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার সংখ্যা গত বছরের ওই সময়ের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি হয়েছে। ইসলামাবাদ বার বার অভিযোগ করেছেন, সীমান্তের ও পার থেকে হামলা সংঘটিত করা হচ্ছে। আফগানিস্তানের তালিবান সরকার অভিযোগ মানেনি।