প্রকাশ্যে ফের গণহত্যা আইএসের। এ বার ঘাঁটি ছেড়ে পালানোর অপরাধে নিজেদেরই ২০ জন সদস্যের মুণ্ডচ্ছেদ করল জঙ্গিরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকের মসুল শহরে সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে বলে সূত্রের খবর। জানুয়ারির মাঝামাঝি, এই মসুলেই আরও এক দল সহযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মেরেছিল জঙ্গিরা। সে বার বলা হয়েছিল, এরা নাকি ইরাকি বাহিনীর আক্রমণে পিছু হটে রামাদি থেকে মসুলে পালিয়ে এসেছিল। তাই এই শাস্তি। তার ঠিক দিন পনেরোর মাথায়, আবারও সহযোদ্ধাদের নির্মম বার্তা দিল আইএস— যুদ্ধক্ষেত্রে ছেড়ে পালানো মানেই খতম!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মসুলেরই এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘শুক্রবার রাতে এক দল সন্দেহভাজনকে মসুলের চেকপয়েন্ট থেকে আটক করা হয়। পরে জানা যায়, এরা পশ্চিম মসুলের দায়িত্বে থাকা আইএসেরই যোদ্ধা। অবিলম্বে তাদের শরিয়ত কোর্টে পেশ করা হয়। ধৃতদের মৃত্যুদণ্ড দেয় আইএস নিয়ন্ত্রিত আদালতই।’’
রামাদি ছেড়ে যারা পালিয়ে এসেছিল, তাদের মতো এদেরও অপদার্থতা মানতে পারেনি মসুলের শীর্ষ জঙ্গি নেতারা। শহরের প্রাণকেন্দ্রে সার বেঁধে এই ২০ জনের মুণ্ডচ্ছেদ করে আইএস তাই গোটা গোষ্ঠীকেই ঘুরিয়ে বার্তা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, জঙ্গিরা যখন এই কাণ্ডটি ঘটাচ্ছে চার পাশে তখন কয়েকশো লোকের ভিড়। বেশির ভাগই আইএস-সদস্য এবং কম্যান্ডার। ঘটনার বীভৎসতায় কম-বেশি প্রত্যেকেরই চোখেমুখে রেশ মিলেছিল আতঙ্কের। এর আগে একাধিক বার আইএস যখন বিদেশি পণবন্দিদের খতম করেছে, তখন কিন্তু এদেরই উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এ বার তির ঘুরে যাওয়াতেই ছবিটা বদলাচ্ছে বলে মনে সেই সূত্রটির অনুমান।
গত নভেম্বর-ডিসেম্বরেও একই ‘অপরাধে’ শ’খানেক সহযোদ্ধার মুণ্ডচ্ছেদ করেছিল আইএস। আইএস-বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, সম্প্রতি সিরিয়া-ইরাকে কিছুটা হলেও জমি হারিয়েছে জঙ্গিরা। মরিয়া হয়েই আইএস তাই জোর দিচ্ছে সংগঠনে। প্রাণের ভয় দেখিয়েই জঙ্গিরা চাইছে আনুগত্য। অন্যথা হলেই খতম!