পুলিশ কুকুর নিয়ে চলছে তল্লাশি। ছবি: রয়টার্স
ম্যানচেস্টার এরিনা তখন মার্কিন পপ গায়ক আরিয়ানা গ্রান্ডে’র সুরের মূর্ছনায় ভরে উঠেছে। কয়েক হাজার শ্রোতা তখন বিভোর সুরের জাদুতে। হঠাৎই বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে ২১ হাজার দর্শক-সহ গোটা স্টেডিয়াম। মুহূর্তের মধ্যে আনন্দ বদলে যায় আতঙ্কের আর্তনাদে। অনুষ্ঠানও তখন শেষের দিকে। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা (ভারতীয় সময় রাত ৩টে) নাগাদ ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের শব্দ। বিকট সেই শব্দ মেলাতে না মেলাতেই আরও একটি বিস্ফোরণ। পরপর দু’টি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ২২ জনের। আহত অন্তত ৫৯। ভয়ে, আতঙ্কে এ দিক ও দিক ছোটাছুটি শুরু করে দেন মানুষ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসে অ্যাম্বুল্যান্স, বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। আরও হামলার আশঙ্কায় আরেনা সংলগ্ন ভিক্টোরিয়া স্টেশনের ট্রেন চলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ-তরুণী বা কিশোর-কিশোরী বলে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জন ২৩ বছরের যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
আরও পড়ুন: ‘বোন ফোন ধরছে না, প্লিজ, আমাকে সাহায্য করুন’
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল
এটিকে একটি আত্মঘাতী হামলা বলে দাবি করে জানিয়েছে পুলিশ। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ওই জঙ্গিরও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, একটি নয়, পরপর দু’টি বিস্ফোরণ হয়েছে এরিনায়। স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারের পাশেই বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণে সম্ভবত ব্যবহার করা হয়েছে আইইডি। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়ে আইএস সমর্খকরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, আরিয়ানা এবং বাকি গায়ক-গায়িকারা সুরক্ষিত আছেন।
বিস্ফোরণের পর বেরিয়ে আসছেন আতঙ্কিত দর্শকরা। দেখুন সেই ভিডিও
ঘটনার পরেই দুর্ঘটনার কবলে পড়া মানুষদের আশ্রয় দিতে স্থানীয়রা নিজেদের বাড়ির দরজা খুলে দেন। #RoomforManchester- কোডে একটি মেসেজও চালু হয়।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের জঙ্গি-বার্তায় উচ্ছ্বসিত নয় ভারত
কিছুদিন আগেই ২২ মার্চ এমনই এক ধ্বংসাত্মক হত্যালীলার সাক্ষী হয়েছিল ব্রিটেন। হাউস অব কমনসের পাশে ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর একের পর এক মানুষকে উন্মত্ত গাড়ির চাকার নীচে পিষে দিয়েছিল এক জঙ্গি। এ বার বিস্ফোণের পোড়া গন্ধে ভরে উঠল ম্যানচেস্টারের বাতাস। ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনের সপ্তাহ দু’য়েক আগে এই হামলা চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনেরও। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে-ও।