প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে হড়পা বানে বিধ্বস্ত রিয়ো ডি-জেনেরো প্রদেশের পেট্রোপলিস। ছবি: পিটিআই।
ভয়াবহ ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব ব্রাজ়িলের পাহাড়ে ঘেরা রিয়ো ডি জেনেরো প্রদেশের একাংশ। ঝড়-পরবর্তী বৃষ্টি ও প্লাবন দুর্যোগ আরও বাড়িয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। এর মধ্যে মিলেছে সুখবরও। ১৬ ঘণ্টা একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকার পরে এক বালিকাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ঝড়ের তাণ্ডবে বাড়িটি ভেঙে পড়েছিল। তাতে চাপা পড়ে যায় ওই বালিকা ও তার বাবা। প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের অনুমান, সন্তানকে বাঁচাতে বাবা নিজের শরীর দিয়ে তাকে আড়াল করে রেখেছিলেন। সত্যিই মেয়ে বেঁচে গিয়েছে। মেয়েটির পাশেই তার বাবার মৃতদেহ মিলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি লু ক্লডিয়ো ডি সুজ়া বলেন, ‘‘মিরাকল্, তাই না! তবু খুব কষ্ট হচ্ছে।’’
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ এই দেশ। পেট্রোপোলিস শহরে একটি বাড়ি ভেঙে ৪ জন মারা গিয়েছেন। সান্টা ক্রুজ় ডা সেরা শহরে ঝড়ের তাণ্ডবে একটি ট্রাক চালক-সহ নদীতে পড়ে যায়। নদীতে ডুবে গিয়েছেন ওই চালক। টেরেসোপোলিসে বাড়ি ভেঙে এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। অ্যারাইয়া ডু কাবো শহরে বাজ পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এসপিরিটো স্যান্টো প্রদেশ থেকেও চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। রিয়োর গভর্নর ক্লডিয়ো কাস্ট্রো জানিয়েছেন, পেট্রোপোলিসের অবস্থা ‘সঙ্কটজনক’। প্রবল বৃষ্টি ও বানভাসি নদী পরিস্থিতি আরওজটিল করেছে।
বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ছে ব্রাজ়িল। দেশের প্রেসিডেন্ট লুইজ় ইনাসিও লুলা ডা সিলভা এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেএ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগেরতীব্রতা বাড়ছে।’’ প্রাণহানির পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ ঘরহারা। অনেকের খোঁজ নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসন সকলকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে। পেট্রোপলিসের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। ছবির মতো সুন্দর শহরটি বানভাসি, কোথাও কোথাও নেমেছে কাদাস্রোত। ধ্বংসের চিহ্ন চতুর্দিকে। দু’বছর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এমনই এক ঝড়ে ২৪১ জন প্রাণ হারান।