সংস্কৃত বাঁচাতে কোর্টের কমিটির পাশে সরকারও

পশ্চিমবঙ্গে সংস্কৃত চর্চার সুদিন ফেরাতে কলকাতা হাইকোর্টের উদ্যোগের পাশাপাশি সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছে রাজ্য সরকারও। টোল বা চতুষ্পাঠীগুলির ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের উপায় বাতলাতে তিন সদস্যের অ্যাড-হক বা অস্থায়ী কমিটি গড়া হচ্ছে বলে উচ্চ আদালত আগেই জানিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৮
Share:

পশ্চিমবঙ্গে সংস্কৃত চর্চার সুদিন ফেরাতে কলকাতা হাইকোর্টের উদ্যোগের পাশাপাশি সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছে রাজ্য সরকারও। টোল বা চতুষ্পাঠীগুলির ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের উপায় বাতলাতে তিন সদস্যের অ্যাড-হক বা অস্থায়ী কমিটি গড়া হচ্ছে বলে উচ্চ আদালত আগেই জানিয়েছিল। শুক্রবার নিজেদের মনোনীত সদস্য-সহ তিন জনেরই নাম ঘোষণা করে হাইকোর্ট জানায়, কমিটি আগামী ৬ জুনের মধ্যে সুপারিশ-সহ রিপোর্ট পেশ করবে।

Advertisement

আদালতের ঘোষণার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারি আইনজীবী দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, হাইকোর্টের রায় মেনে সরকার সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের প্রচার ও বিকাশে সব রকম সহায়তা দিতে প্রস্তুত। আপাতত কী ধরনের সাহায্য লাগবে, তা-ও মোটামুটি জানিয়ে দেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। তিনি বলেন, কমিটির কাজ চলাকালীন তিন সদস্যকে মাসে ১৭ হাজার টাকা সাম্মানিক দেবে রাজ্য। প্রয়োজনে সরকারই তাঁদের গাড়ি এবং অন্যান্য পরিকাঠামো দিয়ে সহযোগিতা করবে। সরকারি আইনজীবী বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কৃতের গুরুত্ব অনুধাবন করেছে। এই ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ হুবহু মেনে চলা হবে।

দীননাথ মিশ্র নামে এক সংস্কৃতপ্রেমী হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, রাজ্যে ৮০০ টোল রয়েছে। প্রতিটিতেই অধ্যক্ষ এবং এক জন সহায়কের বেতন বাবদ টাকা দেয় কেন্দ্র। তবু টোলগুলির বিবর্ণ অবস্থা। পড়ুয়ার সংখ্যা অতি নগণ্য। এক সময় এই সব টোলের গৌরব দেশময় ছড়িয়ে পড়েছিল। অথচ এখন তারা নিছক নামেই টিকে আছে।

Advertisement

আবেদনকারীর আইনজীবী কাশীকান্ত মৈত্র আদালতে বলেন, “নিজেদের গৌরব বাঁচিয়ে রাখতে ভুলে গিয়েছি আমরা। এক সময় ভাটপাড়া, নবদ্বীপ, শান্তিপুর, নৈহাটি প্রভৃতি অঞ্চল সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। তাদের সেই গরিমার ঐতিহ্যও প্রায় অস্তমিত।”

এই পরিপ্রেক্ষিতেই সংস্কৃতের সুবর্ণ সম্পদ সংরক্ষণ এবং যথাযথ অনুশীলনে তার পুনরুজ্জীবন কী ভাবে সম্ভব, সেই হদিস পেতে তিন সদস্যের অ্যাড-হক কমিটি গড়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার বলেছিলেন, কমিটির সদস্যদের অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতে হবে। হতে হবে সংস্কৃতজ্ঞ ও সংস্কৃতপ্রেমী। বিচারপতি নিজেই কমিটির চেয়ারম্যান মনোনয়ন করেছেন। তাঁর নাম সনজিৎকুমার ঢোল (কৃত্য-ব্যাকরণতীর্থ)। বিচারপতিরই নির্দেশে মামলার আবেদনকারী এক জন সদস্যের নাম দিয়েছেন। তিনি হলেন সত্যপদ ভট্টাচার্য (ব্যাকরণতীর্থ)। তৃতীয় জন রাজ্য সরকার মনোনীত অয়ন ভট্টাচার্য। তিনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী এবং বারাসতের পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement