পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এ দুর্নীতির প্রতিবাদে স্লোগান দেওয়ায় শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন কমিশনের তিন কর্মী। কার্যত ‘নজিরবিহীন’ এই পদক্ষেপ প্রত্যাহারের দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন কাল, বৃহস্পতিবার কমিশনের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর তোড়জোড় করছে।
সরকারি সূত্রের খবর, পিএসসি-চেয়ারম্যানের ঘরের সামনে স্লোগান দেওয়ার জন্য ওই তিন জনকে প্রথমে শো কজ করা হয়েছিল। তাঁদের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে এ বার তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন পিএসসি সচিব। সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির একাংশের মতে, কর্মীর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ বেনজির।
২১ অগস্ট আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘ফলপ্রকাশের আগেই রিভিউ, বাড়ল নম্বরও’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। বিষয়বস্তু, ডব্লিউবিসিএসের গ্রুপ সি-তে নিয়োগ পরীক্ষার পরে মেধা-তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অনিয়ম। তার জেরে ১৫ অক্টোবর পিএসসি-চেয়ারম্যানের ঘরের সামনে প্রতিবাদ মিছিল করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ বিপুল রায়, প্রবীরকুমার পাল ও দেবমাল্য চক্রবর্তী নামে তিন কর্মী স্লোগান দেন। তখন অফিসে রাজ্য সরকারের প্রাণিসম্পদ দফতরের ভেটেরিনারি অফিসার পদের জন্য ইন্টারভিউ চলছিল।
কর্তৃপক্ষের দাবি, বারণ সত্ত্বেও ওঁরা স্লোগান বন্ধ করেননি, যাতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ৯ জানুয়ারি তিন জনের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ জারি হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বিপুলবাবু হলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক।
কিন্তু স্লোগান দেওয়ায় শাস্তির প্রক্রিয়া কেন? পিএসসি-র চেয়ারম্যান নুরুল হকের ব্যাখ্যা, “এটা কমিশনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা ছাড়া ওই সিদ্ধান্তের সময়ে আমি ক’দিন ছিলাম না। অন্য এক জন দায়িত্বে ছিলেন।” পিএসসি-সূত্রের খবর, নুরুলের অনুপস্থিতিতে কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন দেবপ্রিয় মল্লিক, যিনি সম্পর্কে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা।