বামেদের ধর্না

সূর্য-বিমানদের চাপে রাজি পুলিশ

নাটকের পুনরাবৃত্তি অব্যাহত! ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার জন্য কলকাতা পুরসভা অনুমতি দিয়েছিল সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে। সে বার আদালতের হস্তক্ষেপ ছিল। এ বার বিরোধী বামেদের চাপে তাদের ধর্না-অবস্থানের ১৭ ঘণ্টা আগে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের ব্যবস্থা করে দিল পুলিশ!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৪
Share:

নাটকের পুনরাবৃত্তি অব্যাহত! ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার জন্য কলকাতা পুরসভা অনুমতি দিয়েছিল সমাবেশের ২৪ ঘণ্টা আগে। সে বার আদালতের হস্তক্ষেপ ছিল। এ বার বিরোধী বামেদের চাপে তাদের ধর্না-অবস্থানের ১৭ ঘণ্টা আগে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের ব্যবস্থা করে দিল পুলিশ!

Advertisement

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রেরা তৈরি হচ্ছিলেন আজ, বৃহস্পতিবার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে প্রয়োজনে গ্রেফতার হওয়ার জন্য। বিপুল লোক এনে এবং রাজ্য নেতারা গ্রেফতার মেনে নেওয়ার পথে এগোচ্ছেন দেখে রাতে নিজেরাই অন্য পথ বাতলে দিল পুলিশ!

মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতায় ধর্না-অবস্থান করার জন্য ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল চেয়ে আবেদন করেছিল বাম দলগুলি। সেখানে অন্য সংগঠনের কর্মসূচি আছে বলে পুলিশ জানানোয় বামেরা রানি রাসমণির জন্য আবেদন করে। পুলিশ জানায়, সেখানেও অন্য সমাবেশ আছে। বামেরা চাইলে সন্ধ্যায় সেখানে অবস্থান শুরু করতে পারে। এই অবস্থায় পুলিশের অনুমতি ছাড়াই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসার কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু। কলকাতা পুলিশ বুধবার বিকালেও জানায়, রানি রাসমণি দেওয়া যাবে না সন্ধ্যার আগে। বিমানবাবুরাও জানিয়ে দেন, তাঁরা ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই অবস্থান করবেন। এর পরেই রাতে পালাবদল! রাত ৯টা নাগাদ পুলিশের তরফে বামেদের জানানো হয়, রানি রাসমণিতেই তারা কর্মসূচি করতে পারবে। তবে সময়টা দুুপুর দু’টো থেকে আধঘণ্টা পিছিয়ে আড়াইটে করতে হবে। তাতে রাজি হয়েছেন বাম নেতারা।

Advertisement

রাতে এ দিন বিমানবাবু বলেন, “ভিক্টোরিয়া হাউস সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি করার জন্য আমরা কলকাতা পুলিশকে চিঠি দিলেও রাতে তারা জানায়, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশ করা যাবে। সেই মতো আমাদের কর্মসূচি স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। অবস্থান বিক্ষোভাকারীরা বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টোয় ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশে মিলিত হয়ে মিছিল করে ধর্নাস্থলে যাবেন। ধর্না-অবস্থান চলবে আড়াইটে থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।” বামফ্রন্টের আর এক নেতার বক্তব্য, “কোথায় ধর্না-অবস্থান হবে, সেটা নিয়ে আমাদের বিশেষ মাথাব্যথা ছিল না। পুলিশ প্রথমে রানি রাসমণিতে ব্যবস্থা করতে চায়নি। চাপ দেওয়ায় পরে কাজ হয়েছে বলে আমরাও কর্মসূচি স্থানান্তরিত করেছি।”

বিকাল পর্যন্ত অবশ্য পরিস্থিতি আলাদা ছিল। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রাজীব মিশ্র বলেছিলেন, “আমরা বিকেল চারটের পরে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউয়ে অথবা দুপুর দু’টো থেকেই গাঁধী মূর্তির সামনে অবস্থান করার জন্য বাম নেতাদের অনুরোধ করেছি। কিন্তু তাঁরা তা মানতে চাইছেন না।” রাতে আবার পটপরিবর্তন হয়ে যায়! এক পুলিশ-কর্তার কথায়, “লোকজন এনে বাম নেতারা সরাসরি সংঘাতের পথে চলে গেলে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই রানি রাসমণিতে প্রথমে যাদের সমাবেশ আছে, তাদের অনুরোধ করে সময়টা একটু মানিয়ে নিতে বলা হয়েছে।” আজই আবার ছাত্র-সংসদে অবাধ নির্বাচন ও শিক্ষায় সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে কলেজ স্কোয়ার থেকে দুপুর দু’টোয় ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করবে এসএফআই। ফলে, কলকাতার রাজপথ আজ থাকবে বামেদের দখলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement