পাঁচ জন বিধায়কের পাঁচমিশালি বক্তৃতা নয়। বিষয় ধরে ধরে বিধায়ক বেছে নিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট বক্তৃতা। বিধানসভার আসন্ন দফাওয়াড়ি বাজেট অধিবেশনের জন্য এমন ভাবেই কৌশল সাজাচ্ছে বিরোধী বামফ্রন্ট। কোনও একটি বিষয় বা বিলে বামেদের তরফে কোনও এক জন বিধায়ককেই বক্তৃতা করতে দেখা যেতে পারে এ বার।
বামেদের বিধায়ক-সংখ্যা এখন ৬১ থেকে কমে হয়েছে ৫৭। সরকার বদলের পরে তিন বছরে এ বারই প্রথম বামফ্রন্টের বিধায়ক-সংখ্যা ৬০-এর নীচে নামল। গত কয়েকটি অধিবেশনে বিরোধীদের জন্য মোট বরাদ্দ সময় ভাগ করে দেওয়া হতো বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ফের শাসক বেঞ্চের বাইরে চলে যাওয়ায় এ বারের অধিবেশনে তাদের জন্য সময় বরাদ্দ হচ্ছে বিরোধীদের ভাগ থেকেই। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাও দলবিহীন সদস্য হিসাবে বিরোধীদের থেকেই সময়ের ভাগ পাবেন। বাম বিধায়কদের বলার সময় তাই কমে আসছে। এই পরিস্থিতিতে বাম পরিষদীয় দল আলোচনা করে ঠিক করেছে, অল্প সময় পূর্ণ মাত্রায় কাজে লাগাতে হবে। তাই প্রয়োজন বুঝে একটি বিষয় বা বিলের উপরে বিতর্কের সময় বাম দলগুলির মধ্যে যিনি দক্ষতার সঙ্গে বলতে পারবেন, সেই রকম এক বা দু’জন বিধায়ককেই বামেদের বরাদ্দ সময়টা ছেড়ে দেওয়া হবে। যাতে অনেক বিধায়কের সংক্ষিপ্ত অথচ খণ্ড খণ্ড বক্তব্যের চেয়ে এক বা দু’জনই গোটা বক্তব্য পেশ করতে পারেন। বাজেট অধিবেশনের সময় কংগ্রেস এই কৌশলই নিয়েছিল গোটা একটা দিন সুখবিলাস বর্মাকে ছেড়ে দিয়ে।
দফাওয়াড়ি বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ, শুক্রবার। চলার কথা এক মাসেরও বেশি। প্রথম দিন অবশ্য শোকপ্রস্তাব হয়ে অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিশেষ পরিস্থিতি বাদ দিয়ে ফ্রন্ট বিধায়কদের সভায় হাজির থাকার নির্দেশ জারি করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। দিল্লিতে সিপিএমের বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ায় আগামী সোমবার সভায় থাকতে পারবেন না বলে সতীর্থদের তিনি যেমন নিজেই জানিয়ে রেখেছেন। এর পাশাপাশি, লোকসভা ভোটের ফলাফলের প্রেক্ষিতে তৃণমূল বিধায়কেরা এ বার অধিবেশনে বেশি আগ্রাসী থাকবেন বলে বামেরা ধরে নিয়েছে।
এক বাম বিধায়কের কথায়, “সরকারের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি খুঁজে অবস্থা বুঝে আমাদেরও আক্রমণাত্মক হতে হবে। নইলে কিছু বলার সুযোগই এ বার মিলবে না!”