রাহুলকে ‘না’ কেন, ব্যাখ্যা চাইল কমিশন

রাহুল গাঁধীর জনসভার জন্য পার্ক সার্কাস ময়দান কেন দেওয়া হল না, তা জানতে চেয়ে কলকাতা পুর প্রশাসনকে চিঠি দিল নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার পুরসভার কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠির জবাবে পুর প্রশাসন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, গত মার্চে কমিশনের পাঠানো এক নির্দেশের কারণেই তাঁরা পার্ক সার্কাস ময়দান কোনও রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কমিশন সূত্রে আর কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০৩:২৮
Share:

রাহুল গাঁধীর জনসভার জন্য পার্ক সার্কাস ময়দান কেন দেওয়া হল না, তা জানতে চেয়ে কলকাতা পুর প্রশাসনকে চিঠি দিল নির্বাচন কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে মঙ্গলবার উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার পুরসভার কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠির জবাবে পুর প্রশাসন অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, গত মার্চে কমিশনের পাঠানো এক নির্দেশের কারণেই তাঁরা পার্ক সার্কাস ময়দান কোনও রাজনৈতিক দলকে ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কমিশন সূত্রে আর কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি।

Advertisement

কাঁকুড়গাছির এপিসি পার্কে আজ, বুধবার বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সভা রয়েছে। সেই সভার অনুমতি দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভাই। কিন্তু পার্ক সার্কাসে রাহুলের সভার জন্য অনুমতি চেয়ে উত্তর কলকাতার কংগ্রেস প্রার্থী সোমেন মিত্র সোমবার পুরসভার কাছে যে আবেদন জানিয়েছিলেন, তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পতের কাছে পুর প্রশাসনের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব। পুর কমিশনারকে শো-কজ করার জন্য লিখিত ভাবে দাবি জানান কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য।

নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, তার ভিত্তিতেই এ দিন পুরসভার কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়। পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের বক্তব্য, গত ২৫ মার্চ পার্ক সার্কাস ময়দানে রাহুলের সভা করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তখন বলা হয়েছিল, ওই ময়দানের চার পাশে স্কুল, কলেজ ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। তার পরই কমিশন নির্দেশ দেয়, ভবিষ্যতে ভোটের প্রচারের জন্য ওই পার্ক কোনও রাজনৈতিক দলকে যেন না দেওয়া হয়। কমিশনের সেই নির্দেশের কথাই এ বার জবাবি চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই অফিসার জানান। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাল, বৃহস্পতিবার শহিদ মিনার ময়দানে সভা করার কথা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুলের।

Advertisement

মোদীর সভায় অনুমতি অথচ রাহুলের সমাবেশে ‘না’ বলার জন্য শাসক দলের দিকে তোপ অব্যাহত রেখেছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “আমরা তো বলছি, তৃণমূল-বিজেপি’র গোপন আঁতাঁত হয়েছে। হাওড়ায় উপনির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী প্রত্যাহারের সময় থেকেই এ সব চলছে। এখন রাজনাথ সিংহ নরম হচ্ছেন আর নরেন্দ্র মোদী গরম দিচ্ছেন!” বিজেপি-র সঙ্গে তলে তলে সমঝোতার কারণেই মোদীর সভার জন্য পুরসভার পার্ক ব্যবহার করতে দেওয়া হলেও রাহুলের ক্ষেত্রে তা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা নির্বেদ রায়, শুভঙ্কর সরকারেরা।

কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, বৃহস্পতিবার ঘাটাল ও কলকাতায় দু’টি সভা করার পরে আরও এক বার পশ্চিমবঙ্গে আসতে চান রাহুল। এই ব্যাপারে এআইসিসি-র নেতারা যোগাযোগ করেছেন প্রদেশ সভাপতি অধীরের সঙ্গে। এআইসিসি-র নেতারা জানিয়েছেন, ১০ মে ফের কলকাতা বা শহরতলিতে প্রচারে যেতে আগ্রহী রাহুল। কংগ্রেসের সহ-সভাপতির আগ্রহের কথা জেনে ১০ তারিখ (শেষ দফার ভোটের প্রচারের শেষ দিন) রাহুলকে সভা করার জন্য দক্ষিণ কলকাতা, ব্যারাকপুর এবং দমদমের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এআইসিসি জানায়নি।

গোটা দেশে প্রচারের কাজে ব্যস্ত থাকায় পশ্চিমবঙ্গে এর আগে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি রাহুল। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপি যে এ বার প্রচুর আসন পাওয়ার আশা করছে, তা নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোদী এত বার পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে যাচ্ছেন বিজেপি-র ভোট শতাংশ বাড়াতে।” সেই একই তাগিদ রয়েছে রাহুলেরও।

রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, শেষ দফায় ১৭টি আসনের মধ্যে বহরমপুরে অধীরের জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে তাঁরা নিশ্চিত। উত্তর কলকাতায় সোমেন মিত্রকে নিয়েও তাঁরা আশাবাদী। সেই সঙ্গেই প্রদেশ নেতারা চাইছেন, দক্ষিণবঙ্গে কংগ্রেসের ভোট শতাংশ যথাসম্ভব বাড়াতে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাহুল ফের প্রচারে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ায় খুশি রাজ্য কংগ্রেস নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement