রাজ্যের আর্থিক দাবি নিয়ে এ বারও সরব হবে তৃণমূল

ইউপিএ সরকারের শরিক হয়েও আদায় করতে পারেননি। বিরোধী হিসেবে তো নয়ই। এ বার এনডিএ সরকারের আমলেও বাংলার আর্থিক দাবি-দাওয়া আদায়ের প্রশ্নে হাল ছাড়তে রাজি নন তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের নতুন অধিবেশন। কংগ্রেস জমানার ধাঁচেই এ বার বিজেপি আমলেও এই দাবি-দাওয়া নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রেও খবর, পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পরিস্থিতি জানাতে অর্থ দফতরের আমলাদের একটি দলকে খুব শীঘ্রই দিল্লি পাঠানো হবে। তার পরে বিষয়টি নিয়ে দিল্লির সঙ্গে কথা বলতে আসার কথা রয়েছে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০৩:২৪
Share:

দিল্লি বিমানবন্দরে তৃণমূলের চার সাংসদ। সোমবার প্রেম সিংহের তোলা ছবি।

ইউপিএ সরকারের শরিক হয়েও আদায় করতে পারেননি। বিরোধী হিসেবে তো নয়ই। এ বার এনডিএ সরকারের আমলেও বাংলার আর্থিক দাবি-দাওয়া আদায়ের প্রশ্নে হাল ছাড়তে রাজি নন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের নতুন অধিবেশন। কংগ্রেস জমানার ধাঁচেই এ বার বিজেপি আমলেও এই দাবি-দাওয়া নিয়ে সংসদের ভিতরে-বাইরে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রেও খবর, পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পরিস্থিতি জানাতে অর্থ দফতরের আমলাদের একটি দলকে খুব শীঘ্রই দিল্লি পাঠানো হবে। তার পরে বিষয়টি নিয়ে দিল্লির সঙ্গে কথা বলতে আসার কথা রয়েছে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরও।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের মাথায় চেপে থাকা দেনার হাত থেকে রেহাই পেতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, ৩৪ বছরের বাম শাসনে রাজ্যের ঘাড়ে প্রায় দু’লক্ষ কোটি টাকার বেশি ঋণ জমেছে। ফলে উন্নয়ন কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। ছবিটা বদলাতে অন্তত তিন বছরের জন্য ঋণশোধ স্থগিত রাখার দাবিতে বার বার কেন্দ্রের কাছে দরবার করেছেন মমতা ও তাঁর দলের সাংসদরা। প্রতিশ্রুতি পেলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এখন কেন্দ্রে নতুন সরকার এলেও ওই দাবি থেকে যে দল সরে আসছে না তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসে বাংলার সঙ্গে দীর্ঘ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রশ্নে লক্ষণীয় রকমের সহানুভূতিশীল ছিলেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ। নরেন্দ্র মোদীও নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রথম পর্যায়ে সহযোগিতার কথাই বলেছিলেন। বাংলায় মমতা ও দিল্লিতে মোদী সরকার এলে বাংলার হাতে উঠবে জোড়া লাড্ডু এমন কথা বলে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। পরের দিকে অবশ্য মোদী তাঁর প্রচারে তৃণমূল নেত্রীকে তীব্র আক্রমণই করেছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর স্পষ্ট বক্তব্য, উন্নয়নের প্রশ্নে কোনও ভাবে বঞ্চনা করা হবে না রাজ্যকে। কিন্তু মনমোহন সিংহের আশ্বাসের পরিণতি দেখেছে তৃণমূল। তাই দাবি আদায়ের প্রশ্নে চাপ রেখে চলতে চায় তারা। তবে এমন নয় যে বুধবার থেকেই সংসদে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখাবে তৃণমূল। কিন্তু ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হবে দল।

সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে আজ সকাল থেকেই দিল্লি আসতে শুরু করেছেন তৃণমূলের সাংসদরা। দলের ৩৪ জন সাংসদের মধ্যে ২০ জনই নতুন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, “৪ জন সাংসদ দিল্লি এসেছেন আজ সকালে। চিত্রতারকা দেব বাদে নতুনদের সকলেই রাতের বিমানে এসে গিয়েছেন।” অধিবেশনের প্রথম দু’দিন চলবে সাংসদদের শপথ গ্রহণের পর্ব।

শুধু রাজ্যের দাবি-দাওয়াই নয়, সংসদে নিজেদের দলের জন্য দফতর আদায়ের জন্যও লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃণমূল। ইউপিএ আমলের প্রায় অর্ধেক সময় সরকারের শরিক হওয়া সত্ত্বেও সংসদে দলীয় দফতর জোগাড় করতে পারেনি তৃণমূল। এখন দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৪৬ সাংসদ রয়েছেন তৃণমূলের। এ বার তাই শুরু থেকেই দফতর জোগাড়ে তৎপর হয়েছেন দল। বিষয়টি নিয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে বৈঠক করবে দল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement