আর রাজ্য স্তরে নয়, এ বারে দিল্লি এসে খোদ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ভি এস সম্পতের কাছে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ জানিয়ে গেলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বাদ গেলেন না স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। বিমানবাবুর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব শুধু রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকদের নয়, ভোটারদেরও নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। একই সঙ্গে ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের দাবি, অবাধ ভোট হলে পশ্চিমবঙ্গে বামেরা এ বার ভাল ফল করবে। তবে তাঁরা ক’টি আসন পেতে পারেন, সে ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিমান। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছেন, ৪২টির মধ্যে ৪২টি আসনই পাবেন! তা হলে বাকি থাকে শূন্য! তাই আমি আসন নিয়ে কিছু বলছি না।” সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেচ্ছ হিংসা ও রিগিং সত্ত্বেও বামেরা ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এ বার অবাধ নির্বাচন হলে ফল আরও ভাল হবে।”
কমিশনের কাছে নালিশ জানাতে এ দিন বিমানবাবুর সঙ্গে গিয়েছিলেন মঞ্জুকুমার মজুমদার, মনোজ ভট্টাচার্য, জয়ন্ত রায়ের মতো শরিক নেতারাও। মমতা-সহ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি সিইসি-সহ পুরো কমিশনের কাছে বামেদের অভিযোগ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী গত কাল প্রচারে গিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছেন। ইয়েচুরির বক্তব্য, হাবরার বিডিও নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সরানোয় তৃণমূল বিধায়ক তাঁর মাথা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। গত কাল মুখ্যমন্ত্রী প্রচারে গিয়ে ওই বিধায়কের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। ইয়েচুরি বলেন, “মনে করি, এ ক্ষেত্রে কমিশনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
৫ এপ্রিল ভি এস সম্পতের নেতৃত্বে তিন নির্বাচন কমিশনারের পুরো দল পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছে। তার আগে আজ কমিশনের কাছে বাম নেতাদের আবেদন, সন্ত্রাসের জেরে রাজ্যের বহু মানুষ এখনও ঘরে ফিরতে পারছেন না। এঁদের ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা হোক। এ দিন বিমান বলেন, “তৃণমূলের নেতারা কাউকে ইঁদুর বলছেন! এক জন মানুষকে ইঁদুর-সাপ-ব্যাঙ বলা হচ্ছে! ওরা মানুষকে মানুষ হিসেবেই বিচার করে না।” সম্পতের কাছে বিমানের দাবি, প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে পর্যবেক্ষকের সঙ্গে শুধু আইন-শৃঙ্খলার দিকটি দেখতে এক জন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হোক।