চিকিৎসারত্ন পুরস্কার দিচ্ছেন নির্মল মাজি!
চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘অসামান্য’ অবদানের জন্য চিকিৎসকদের ‘চিকিৎসারত্ন’ পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার। তবে সরকারের অপেক্ষা না-করে এ বার সরকার-অনুগত চিকিৎসক সংগঠনই নিজ দায়িত্বে ‘চিকিৎসারত্ন’ পুরস্কার দিচ্ছে! গোটা বিষয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তৃণমূলের চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজি। তিনি তৃণমূলপন্থী চিকিৎসক-সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’ (পিডিএ)-এর রাজ্য সভাপতি।
২০ জন চিকিৎসককে বাছাই করা হয়েছে। তাঁদের হাতেই আজ, শনিবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তুলে দেওয়া হবে ‘চিকিৎসারত্ন সম্মান।’ নির্মলবাবুর কথায়, ‘‘অযথা বিতর্ক তৈরি করে লাভ নেই। রাজ্যের যে সব ডাক্তারবাবুরা নিজেদের কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজ করে নজির তৈরি করেছেন, তাঁদেরই চিকিৎসারত্ন দেওয়া হবে।’’
কিন্তু যে সম্মান সরকার দেবে বলে একাধিক বার আলোচিত হয়েছে, তা কোনও চিকিৎসক সংগঠন কি দিতে পারে? পিডিএ-র অন্যতম সচিব শান্তনু
সেনের জবাব, ‘‘আমরা সংগঠনগত ভাবে ঠিক করেছি, যে সব চিকিৎসক দৃষ্টান্তমূলক পরিষেবা দিয়েছেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিয়ে চিকিৎসক সমাজকে উজ্জীবিত করব। এর মধ্যে অন্য কিছু খোঁজা ঠিক হবে না।’’ যদিও অনেক চিকিৎসকই অভিযোগ তুলেছেন, শাসক দল ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকদেরই চিকিৎসারত্ন দেওয়া হচ্ছে। এঁদের মধ্যে এসএসকেএমের কুকুরের ডায়ালিসিস কাণ্ডে জড়িত এক জন নেফ্রোলজিস্টের নামও রয়েছে।
চিকিৎসক মহলের বড় অংশের মতে, চিকিৎসারত্নের মতো সম্মান প্রাপক বাছতে গেলে আগে কমিটি তৈরি করতে হয়, নাম জমা করতে হয়। যাঁদের নাম জমা পড়ল, তাঁদের মধ্যে কে কী কাজ করেছেন, খতিয়ে দেখে তবে সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। এ ক্ষেত্রে কয়েক জন নেতা তাঁদের কাছের চিকিৎসকদের নাম বলেছেন এবং তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন।
শুধু চিকিৎসারত্নই নয়, পিডিএ-র ওই অনুষ্ঠানে কিছু নার্সকেও বিশেষ সেবিকা পুরস্কার কিছু এবং টেকনিশিয়ানকে স্বাস্থ্যসাথী পুরস্কারও দেওয়া হবে বলে জানান নির্মলবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘এতে উৎসাহিত হয়ে চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ানেরা আর জেলায় যেতে আপত্তি করবেন না। সকলেই বেশি কাজ করবেন।’’