লোকসভা ভোটে রাজ্যে শাসক দলের সাফল্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে সৌজন্যমাফিক শুভেচ্ছা জানিয়েই রাজধর্ম পালনের দাবি তুলল সিপিএম। ভোটে জয়-পরাজয়ের ফয়সালা যখন হয়েই গিয়েছে ও শাসক দল সাফল্য পেয়েছে, তার পরে নির্বাচন-উত্তর হিংসা বন্ধের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। জেলায় জেলায় হিংসা বন্ধ করতে ব্লক স্তর থেকে সর্বদল বৈঠক ডাকারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্রবার পাঠানো বিরোধী দলনেতার চিঠি শুরুই হয়েছে এই বলে যে, ‘ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে আপনার দলের উল্লেখযোগ্য সাফল্যে আমাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। যদিও নির্বাচনের সময় রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আমাদের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বিধানসভায় আমাদের নির্দিষ্ট বক্তব্য আমরা পেশ করব’।
বিধানসভায় দফাওয়াড়ি বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে ৬ জুন। তখনই এই নিয়ে সরব হতে চান সূর্যবাবুরা। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে সূর্যবাবুর অভিযোগ, কোচবিহার, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলির মতো বহু জেলায় শাসক দলের হাতে বাম কর্মী-সমর্থকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, দলীয় কার্যালয় ভেঙে, পুড়িয়ে বা দখল করে নেওয়া হচ্ছে, কোথাও চাষ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সূর্যবাবু এ দিন বলেন, “এ সমস্যা নিয়ে অবিলম্বে সর্বদল বৈঠক ডাকা হোক। এখন বামপন্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু অবস্থা যে দিকে যাচ্ছে, শাসক দলও রেহাই পাবে না!” ভোটের পরে এই হিংসা থামানোর দায়িত্ব যে রাজ্য প্রশাসনেরই, মনে করিয়ে দিয়েছেন সূর্যবাবু। জয়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানালেও রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শাসক দলের পক্ষে রায় দেননি, তা-ও উল্লেখ করেছেন সূর্যবাবু। রাজ্যে এ বার তৃণমূল ৩৪টি আসন পেলেও ভোট পেয়েছে ৩৯%, আর বাকিরা ৬১%। সূর্যবাবুর মন্তব্য, “সর্বত্র নৈরাজ্য, দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, শ্রমিক-কৃষকের আত্মহত্যা এ সবের পক্ষে বেশি মানুষ কিন্তু রায় দেননি। বামপন্থীদের লড়াই জারি থাকবে।”