দলে বিতর্কের জেরে মইনুল হাসানের পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে তদন্তকে আপাত শিকেয় তুলে রাখল সিপিএম! রাজ্য কমিটির বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই বিষয়ে এখন ‘ধীরে চলো’ নীতিই নিচ্ছেন তাঁরা। মইনুলকে না জানিয়ে যে পদ্ধতিতে তদন্ত কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল, তার জন্য দলের অন্দরে ভুল স্বীকারও করে নিয়েছেন বিমানবাবু।
প্রাক্তন সাংসদ এবং সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য মইনুলের পরিবার বহু পুরুষ ধরে সম্ৃদ্ধিশালী। আচমকাই মঙ্গলবার রাজ্য কমিটির বৈঠকের প্রথম দিন রাজ্য সম্পাদকের রিপোর্টে জানানো হয়, তাঁর ওই পারবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত কিছু অভিযোগের তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মৃদুল দে’কে। সিদ্ধান্ত জানার পরে বিস্মিত ও ব্যথিত মইনুল রাজ্য সম্পাদককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, দল তাঁকে অপরাধী মনে করলে প্রাথমিক সদস্যপদই ফিরিয়ে নিক! তিনি আর দলেই থাকতে চান না। আনন্দবাজারে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ায় এ দিন বিতর্ক আরও বাড়ে। তার আগে রাতেই অবশ্য আলিমুদ্দিনে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়। তার ভিত্তিতেই এ দিন রাজ্য কমিটির জবাবি ভাষণে বিমানবাবু জানান, এ বিষয়ে দল মইনুলের সঙ্গে কথা বলবে। মইনুলও দলের পদক্ষেপে সাহায্য করার কথা বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছেন।
বিমানবাবু এ দিনের বৈঠকে বলেছেন, মইনুলের পরিবারের জমি কেনা-বেচা সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ দলের কাছে এসেছে। তবে এ নিয়ে প্রাক্তন সাংসদকে কিছুই না জানিয়ে ওই ভাবে তদন্ত কমিশনের কথা ঘোষণা করে দেওয়া পদ্ধতিগত ভাবে ভুল হয়েছে। সিপিএম সূত্রের খবর, মইনুলকে ডেকে এ ব্যাপারে তাঁরা আলোচনা করবেন বলে বিমানবাবু জানান। তাঁর ব্যাখ্যা শুনে তবেই পরবর্তী কোনও পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে কি না, সে সব ভাবা হবে। মইনুলও রাজ্য কমিটিতে বলেন, রাজ্য সম্পাদকের এই কথার পরে কিছু বলার প্রশ্ন নেই। দল ডাকলে তিনি যা বলার অবশ্যই বলবেন। তবে একটা ব্যাপারই তিনি পরিষ্কার করে দিতে চান যে, তাঁদের পরিবারের জমি কেনার কোনও প্রশ্ন নেই। তাঁদের পারিবারিক জমি প্রচুর। রক্ষণাবেক্ষণের অসুবিধার জন্য তার অনেক কিছুই এখন বেচে দেওয়া হচ্ছে। দল চাইলে সে সবই তথ্য দিয়ে দেখানো যাবে। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, “কিছু অভিযোগ এসেছিল এবং তার জেরে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। রাজ্য সম্পাদক নিজেই ভুল বোঝাবুঝি মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন।”