বহিষ্কারের প্রতিবাদ আজ আলিমুদ্দিনের দোরগোড়ায়

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো ওজনদার নেতার বহিষ্কারের সময়ে হয়নি। হাল আমলে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বা লক্ষ্মণ শেঠের বহিষ্কারের পরেও হয়নি। তুলনায় দলের অনামী নেতা শুভনীল চৌধুরীকে সিপিএম থেকে বহিষ্কারের জেরে এ বার প্রতিবাদ মিছিল হতে চলেছে আলিমুদ্দিনের দোরগোড়ায়! প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন কলকাতায় সিপিএমেরই কিছু নিচু তলার নেতা-কর্মী। কারণ, লোকসভা ভোটে নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পরে সিপিএম এখন সত্যিই বিপাকে। সদর দফতরে কামান দাগার জন্য এই পরিস্থিতিকেই ব্যবহার করতে চাইছেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৪ ০৩:৪৪
Share:

সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো ওজনদার নেতার বহিষ্কারের সময়ে হয়নি। হাল আমলে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা বা লক্ষ্মণ শেঠের বহিষ্কারের পরেও হয়নি। তুলনায় দলের অনামী নেতা শুভনীল চৌধুরীকে সিপিএম থেকে বহিষ্কারের জেরে এ বার প্রতিবাদ মিছিল হতে চলেছে আলিমুদ্দিনের দোরগোড়ায়! প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন কলকাতায় সিপিএমেরই কিছু নিচু তলার নেতা-কর্মী। কারণ, লোকসভা ভোটে নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পরে সিপিএম এখন সত্যিই বিপাকে। সদর দফতরে কামান দাগার জন্য এই পরিস্থিতিকেই ব্যবহার করতে চাইছেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ।

Advertisement

লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে দলের নেতৃত্বে অবিলম্বে পরিবর্তন চেয়ে একটি প্রকাশ্য বিবৃতি জারি করেছিলেন রাজ্য সিপিএমের ওয়েবসাইট দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখার সম্পাদক শুভনীল। দলে থেকে শৃঙ্খলাবিরোধী এমন কাজ করা যায় না বলে তাঁকে ওই বিবৃতি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে বলেছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু শুভনীল রাজি না-হওয়ায় তৎক্ষণাৎ তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় বার্তা গিয়েছে, নেতৃত্বের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে শুনতেই চাইছে না আলিমুদ্দিন। বরং, প্রশ্নকর্তাদের উপরেই শাস্তির খাঁড়া নামছে। সিপিএম নেতৃত্বের মনোভাব সম্পর্কে তৈরি হওয়া এই ধারণাকে কৌশলে ব্যবহার করেই আজ, মঙ্গলবার দলের রাজ্য দফতরের অদূরে নীরব প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হচ্ছে। মৌলানা আজাদ কলেজের (ঘটনাচক্রে, যে কলেজ রাজ্যের একাধিক সিপিএম নেতার ধাত্রীভূমি) সামনে জড়ো হয়ে ওই প্রতিবাদ মিছিল যাবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সব্জি মোড় পর্যন্ত। তার পরে সেখানে প্রতিবাদী পথসভা।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই প্রতিবাদের উদ্যোক্তা সিপিএমেরই একাংশ। শুভনীল সোমবার জানিয়েছেন, তাঁকে বহিষ্কার করে যে ভাবে ভিন্ন মতের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে, তার প্রতিবাদে ওই কর্মসূচির আহ্বানে সামিল হয়েছেন সিপিএমের আলিমুদ্দিন-মল্লিকবাজার লোকাল কমিটির সম্পাদক হাসনাইন ইমাম, ওই লোকাল কমিটিরই আওতাধীন শাখা সদস্য তনবীর আহমেদ খান, মানিকতলা উত্তর লোকাল কমিটির অন্তর্গত শাখার সদস্য সুমন্ত সেন, কলকাতা জেলার দলীয় সদস্য দেবু মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সিপিএমের একটি সূত্রের খবর, ইমাম আবার রেজ্জাকের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ওই প্রতিবাদে হাজির থাকার জন্য রাজি করিয়েছেন। বিক্ষুব্ধ এই নেতাদের নামে বিবৃতিতে এ দিন বলা হয়েছে, সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বে অবিলম্বে বদল চেয়ে শুভনীল দলের লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থকদের মনের কথারই প্রতিধ্বনি করেছিলেন। গত কয়েক বছরে রাজ্য সরকারের মদতে পুষ্ট সন্ত্রাসের কবলে পড়েছেন অজস্র বাম কর্মী-সমর্থক। যে নেতারা ওই আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে পারেননি, তাঁদের কোনও অধিকারই নেই সাধারণ কর্মীদের চোখ রাঙিয়ে দল থেকে বার করে দেওয়ার! নিচু তলা থেকে উঠে-আসা ন্যায্য দাবি শুনে নেতৃত্বকে সাড়া দিতে হবে, এই দাবিতেই আজকের কর্মসূচি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement