বধূ-নিগ্রহে কেন অধরা পুলিশ, প্রশ্ন বিচারপতির

অনেক মামলায় সাধারণ বা রাজনৈতিক দলের অভিযুক্তদের গ্রেফতারে গড়িমসি করায় বা অতি-তৎপরতা দেখানোয় বিভিন্ন সময়ে আদালতের তোপের মুখে পড়েছে পুলিশ। এ বার পাড়ুইয়ের সাত্তোর গ্রামের গৃহবধূর উপরে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। সাত্তোরের ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছে তারাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:২১
Share:

অনেক মামলায় সাধারণ বা রাজনৈতিক দলের অভিযুক্তদের গ্রেফতারে গড়িমসি করায় বা অতি-তৎপরতা দেখানোয় বিভিন্ন সময়ে আদালতের তোপের মুখে পড়েছে পুলিশ। এ বার পাড়ুইয়ের সাত্তোর গ্রামের গৃহবধূর উপরে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। সাত্তোরের ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছে তারাই।

Advertisement

১৭ জানুয়ারি রাতে বীরভূমের সাত্তোর গ্রামের ওই বধূকে বর্ধমানের কলমডাঙায় তাঁর বাপের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের গাছে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। নির্যাতিতা জানান, তৃণমূল কর্মীদের সামনে পুলিশকর্মীরাই তাঁর উপরে অত্যাচারে নেতৃত্ব দেন। পুলিশ ওই মহিলার ভাশুরপোর খোঁজ না-পেয়ে তাঁর উপরে অত্যাচার করায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় হয়।

ওই মহিলার ভাশুরপো মিঠুন শেখের বিরুদ্ধে পাড়ুই থানায় বোমাবাজি-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের দাবি ছিল, মিঠুন লুকিয়ে রয়েছে কলমডাঙায়। তাই বীরভূম জেলা পুলিশের ‘স্পেশাল অপারেশন’ দল ১৭ জানুয়ারি রাতে সেখানে হানা দেয়। ওই মহিলার দু’হাতের আটটি আঙুল ভেঙে দেওয়া হয়। ব্লেড চালানো হয় তালুতে। এ ছাড়াও তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত করা হয়।

Advertisement

এক মাস আগে ওই ঘটনা নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছে। শুক্রবার তার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, ওই ঘটনায় জেলার পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করছে সিআইডি। কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী লাঞ্ছিতাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে প্রশাসন।

ডিভিশন বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী সরকারি আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ওই ঘটনায় পুলিশকর্মীরা অভিযুক্ত হয়ে থাকলে তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? সরকারি আইনজীবী জানান, তদন্তকারীর সামনে হাজিরার জন্য ওই পুলিশকর্মীদের কাছে নোটিস পাঠানো হয়েছে। “নোটিস পাঠানোই যথেষ্ট নয়,” মন্তব্য করেন বিচারপতি বাগচী।

আইনজীবী বিকাশবাবু এ দিন আদালতে জানান, তিনি নিরপেক্ষ তদন্ত চান। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ওই ঘটনায় বিকাশবাবুকে আদালত-বান্ধব নিযুক্ত করা হল। তাঁকে সব দিক থেকে সাহায্য করতে হবে সরকারি আইনজীবীকে। মামলার নথিপত্রের প্রতিলিপিও দিতে হবে তাঁকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement