জখম এক তৃণমূল কর্মীকে বর্ধমান মেডিক্যালে আনা হচ্ছে।—নিজস্ব চিত্র।
এ বার বিস্ফোরণ বীরভূমে। ইলামবাজার থানার মেটেকোনা গ্রামে শুক্রবার বিকেলে ওই বিস্ফোরণে জখম হয়েছেন একাধিক। স্থানীয় বিলাতি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা এক্রামুল হকের বাড়ি লাগোয়া জমিতে ওই বিস্ফোরণ হয় বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর। এই ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
বিস্ফোরণে গুরুতর জখম তৃণমূল কর্মী, শালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা শেখ বাচ্চুকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, আরও কয়েক জন আহত হলেও তাঁদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, উপপ্রধানের বাড়ির পাশে তাঁরই জমিতে এ দিন বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। সে সময় এক্রামুল নিজেও সেখানে ছিলেন। অসতর্কতায় হঠাৎ বোমা ফেটে যায়।
বীরভূমের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য বলেন, “কারও বাড়িতে নয়, বাড়ির পাশে বোমা বাঁধা হচ্ছিল বলে শুনেছি। ওই ঘটনায় এক জন আহত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
লোকসভা ভোটের পর থেকেই ইলামবাজার ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ চলছে। ঘুড়িষা ও ধরমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় দুই বিজেপি কর্মী খুনও হয়েছেন। বিজেপি-র অভিযোগ, তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যেই উপপ্রধানের বাড়িতে বোমা বাঁধা চলছিল। বুধবার রাতেই ধরমপুরে গুলিতে খুন হন এনামুল শেখ নামে এক বিজেপি কর্মী। ইলামবাজারে বিজেপি-র পর্যবেক্ষক চিত্তরঞ্জন সিংহের অভিযোগ, “বিলাতি পঞ্চায়েতের জগদ্দলপুর-গোলটিকুরী এলাকা দখলের জন্য দুষ্কৃতী জড়ো করে বোমা বাঁধার কাজ নিজের বাড়িতেই করছিলেন উপপ্রধান। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।” তাঁর আরও দাবি, “এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট, তৃণমূল আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।”
এ দিনই এনামুলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ইলামবাজারে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর দাবি, “বীরভূমে গ্রামের পর গ্রাম মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তাই তৃণমূল ভয় পেয়েছে। ওরা খুনের রাজনীতি শুরু করেছে।” এনামুল খুনের বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলেও রাহুলবাবু জানান।
বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলামের দাবি, “অভিযোগ মিথ্যা। সমাজবিরোধীদের দিয়ে বোমা বাঁধার কাজ তৃণমূল করে না। আমার কাছে প্রাথমিক ভাবে খবর, বাড়ি ফেরার পথে শেখ বাচ্চুকে বোমা মেরেছে বিজেপি।” উপপ্রধানের সঙ্গে এ দিন অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।