রাজ্যে তৃণমূলের থেকে বামেদের ভোটের ব্যবধান ক্রমে কমছে বলে দাবি করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেবেরও দাবি, তৃণমূলের শক্তি যে কমছে, লোকসভা ভোটেই তার প্রমাণ মিলবে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে বুদ্ধবাবু বলেছেন, “গত বিধানসভা ভোটের ফল পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তৃণমূল এবং বামফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ৩০ লক্ষ। সেই ব্যবধান এখন কমেছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ও পুরভোটে যা হয়েছিল, তা সবটা জনসমর্থনের ভিত্তিতে নয়। ভোটের আগে এবং ভোটের দিন তৃণমূল গোলমাল করেছিল। লোকসভা ভোটে আমরা সন্ত্রাসের মোকাবিলা করব।” বাম সূত্রের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের ধরন এক নয়। এ বার চতুর্মুখী লড়াই হচ্ছে। সেটাও যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক।
গৌতমবাবুও বুধবার একটি টিভি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, তাঁদের ফল ২০০৯-এর মতোই হবে। তাঁর বক্তব্য, “সংখ্যালঘুদের ভোট হারাবেন মমতা। উত্তর ২৪ পরগনায় বাঙালি মুসলিমদের ভোট পেয়েই পঞ্চায়েতে সেখানকার বিস্তীর্ণ অংশে জিতেছি আমরা।” একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “প্রবল শক্তি আর নেই মমতার। তা হলে গুজরাত, ঝাড়খণ্ড, অসমের সভা বাতিল করলেন কেন?”
লোকসভায় ঘুরে দাঁড়াতে ছেড়ে-যাওয়া সমর্থকদের একাংশকে ফিরিয়ে আনাই যে মূল লক্ষ্য, তা-ও বুঝিয়ে দেন বুদ্ধ-গৌতম। বুদ্ধবাবুর কথায়, “আমাদের ভুলের কথা তাঁদের (ছেড়ে যাওয়া সমর্থকদের) খোলাখুলি বলছি। একটা অংশ বুঝতেও পারছেন।” গৌতমবাবু বলেছেন, “যাঁরা ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা সবাই তৃণমূল পার্টি অফিসে গিয়ে বসে পড়েননি! এঁরা এখন ভাবছেন। এঁদের কাছে যাচ্ছি। আরও যাব।”
সিঙ্গুর প্রসঙ্গে তাঁর পুরনো বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে রতন টাটার দিকেও ইঙ্গিত করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, “ভেবেছিলাম উনি (মমতা) কিছু বক্তৃতা করবেন। কিন্তু কারখানাটা হবে। শেষ পর্যন্ত রতন টাটাই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। বললেন, অবাঞ্ছিত অতিথি হয়ে থাকতে চান না। পরে জেনেছিলাম, তার আগেই তিনি গুজরাতের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছিলেন।”
বুদ্ধবাবু এ-ও মনে করেন, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার বহিষ্কার ভোটে প্রভাব ফেলবে না। বরং তাঁর বক্তব্য, “এতে দলের স্বাস্থ্য ভাল হবে! আদর্শের উপরে ভিত্তি করে শৃঙ্খলা নিয়েই একটা কমিউনিস্ট পার্টির চলা উচিত!” প্রতিক্রিয়ায় রেজ্জাকের মন্তব্য, “ওঁকে তাড়ালেই পার্টির ভাল হবে!” একটি অনুষ্ঠানে এ দিনই রেজ্জাক বলেছেন, “উনি তো কখনও সংগঠন করে ওঠেননি। কাকার নাম ভাঙিয়ে প্রক্সি লিডার হয়ে এসেছেন!”