স্কুলে ঢুকতে না পেরে ‘স্পিডপোস্টে’ গড়বেতা থানায় অভিযোগ জানালেন গড়বেতার সিপিএম নেতা তপন ঘোষ। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল না বলেই বুধবার স্কুলে ঢুকতে পারিনি। হাইকোর্টের নির্দেশের পরও পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করেনি। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলা স্কুল পরিদর্শককে বিষয়টি জানিয়েছি। আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টেও জানাব।” তৃণমূলের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজশ রয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।
তপনবাবুর অভিযোগ নস্যাত্ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “পড়ুয়াদের বিক্ষোভে উনি (তপন ঘোষ) স্কুলে ঢুকতে পারেননি। পুলিশ তার দায়িত্ব সঠিক ভাবেই পালন করেছে।”
রাজ্যে পালাবদলের পরে বুধবারই প্রথম স্কুলে যান তপনবাবু। স্কুলে অবশ্য ঢুকতে পারেননি। গেটের সামনে থেকেই ফিরে যেতে হয় তাঁকে। তপনবাবু সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য। গড়বেতার এক সময়ের দাপুটে এই সিপিএম নেতা রাজ্যে পালাবদলের পরপরই এলাকা ছাড়া হন। এক সময় ছোট আঙারিয়া মামলায় নাম জড়িয়ে ছিল তাঁর। প্রথমে রাজ্য পুলিশ তদন্ত করলেও পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত ভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। বাম আমলে এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান তিনি। রাজ্যে পরিবর্তনের পরে অবশ্য নতুন প্রাণ পায় ছোট আঙারিয়া মামলা। নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলাতেও তপনবাবুর নাম জড়ায়। এই মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে ‘ফেরার’ তপনবাবু পরে আদালতে আত্মসমর্পন করেন। মাস কয়েক জেল হেফাজতে থাকার পর জামিন পান। অন্য কয়েক’টি মামলাও ছিল এই সিপিএম নেতার নামে। একে একে সমস্ত মামলা থেকে জামিন পেয়ে স্কুলে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন তপনবাবু।
গত সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট তপনবাবুকে স্কুলে যাওয়ার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। মঙ্গলাপোতা হাইস্কুলের এই শিক্ষকের অভিযোগ, আগে বেশ কয়েক বার তাঁকে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। যতবারই স্কুলকে জানিয়েছেন, কাজে যোগ দিতে যাবেন, ততবারই স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ এই সিপিএম নেতার।
দিন কয়েক আগে তিনি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান, বুধবার কাজে যোগ দিতে যাবেন। সেই মতো ওই দিন পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে স্কুলে যান। গিয়ে দেখেন, স্কুল গেটে ছাত্র-বিক্ষোভ চলছে। ফলে, কাজে যোগ দেওয়া আর হয়ে ওঠেনি। ফিরে যেতে হয় তাঁকে। এ দিনও তপনবাবু বলেন, “বুধবার পরীক্ষা ছিল। তাই তৃণমূলের জোরাজুরিতেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করতে পারেননি। পরিস্থিতি দেখে ছাত্রদের দিয়ে বিক্ষোভ করায় তৃণমূল। যাতে কাজে যোগ দিতে না পারি। এই কাণ্ড ঘটানোর পিছনে তৃণমূলের সঙ্গে পুলিশেরও যোগসাজশ রয়েছে।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষের জবাব এ সব অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়। তপন ঘোষ কী করেছেন, তা গড়বেতার মানুষ জানেন!