তাপসকে নিয়ে জোড়া কাঁটায় জেরবার তৃণমূল

চলতি অধিবেশনে লোকসভায় থাকবেন না তাপস পাল। বুধবার তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পিকার সুমিত্রা মহাজনকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানান। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার জন্যই সংসদে থাকতে পারবেন না কৃষ্ণনগরের সাংসদ। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে জিতে দিল্লি আসার পর থেকে অবশ্য তাপস নিয়মিতই সংসদে হাজির থেকেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৯
Share:

চলতি অধিবেশনে লোকসভায় থাকবেন না তাপস পাল। বুধবার তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পিকার সুমিত্রা মহাজনকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানান। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার জন্যই সংসদে থাকতে পারবেন না কৃষ্ণনগরের সাংসদ।

Advertisement

২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে জিতে দিল্লি আসার পর থেকে অবশ্য তাপস নিয়মিতই সংসদে হাজির থেকেছেন। লোকসভায় বিরোধিতায় সরব হওয়া থেকে গাঁধী মূর্তির নীচে ধর্না বসা পর্যন্ত, সব কিছুতেই ছিলেন তিনি। গত মাসে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম সংসদীয় অধিবেশনেও তাপস ছিলেন স্বমহিমায়। একদা ফিল্ম ও বর্তমানে রাজনৈতিক দুনিয়ার সতীর্থ মিঠুন চক্রবর্তী, মুনমুন সেনের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন। তাই তাপসের গরহাজির থাকার পিছনে শুধু অসুস্থতাকে দায়ী করতে নারাজ রাজধানীর নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, নদিয়ার চৌমাহা গ্রামে বিতর্কিত বক্তৃতা দেওয়ার পরে সংসদে এসে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চান না তাপস। তাঁর দলেরও একই ইচ্ছে।

দিল্লির নেতারা বলছেন, তাপসের অসুস্থতার ঘটনা নতুন নয়। রাজধানীতে এর আগেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাপস। হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তখন দিন কয়েক পরে সুস্থ হয়ে ফের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন তিনি। তাই এ বারে তিনি কতটা অসুস্থ, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

রাজনৈতিক সূত্রের খবর, চৌমুহা ও গোপীনাথপুরের বক্তৃতার পরে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে লোকসভা থেকে দূরে রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল। কারণ, এ বার দেশ জুড়ে মহিলা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংসদে সরব হচ্ছেন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। এমনকী, তৃণমূলের মহিলা সাংসদদের উপরে অশালীন আচরণের অভিযোগে বিজেপির এক সাংসদের বিরুদ্ধে লোকসভাতেই প্রতিবাদ জানিয়েছিল তৃণমূল। এই অবস্থায় প্রকাশ্যে বিরোধীদের ধর্ষণের হুমকি দেওয়া সাংসদ যদি অধিবেশনে হাজির থাকেন, তা হলে সেটা তৃণমূলের পক্ষে অবশ্যই বিড়ম্বনার কারণ হতো।

শুধু লোকসভাই নয়। চৌমুহায় তাপসের বক্তৃতা নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত রাজ্য সরকারের আইনজীবী (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই মামলার নথি জমা দিতে বলেছেন। কেন? তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যের পরে পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে রয়েছে, এই অভিযোগ করে বিচারপতি দত্তের এজলাসে মামলা করেছেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সুমিত সান্যাল। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি দত্ত গত ৯ জুলাইয়ের শুনানিতে জিপি-কে প্রশ্ন করেছিলেন, তৃণমূল সাংসদের ওই ধরনের মন্তব্য করাকে অপরাধমূলক কাজ আখ্যা দেওয়া যায় কি না। সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের কী বক্তব্য, তা জিপি-কে জানাতে ওই দিন-ই নির্দেশ দেন তিনি।

এ দিন মামলার শুনানির শুরুতেই জিপি বিচারপতি দত্তকে জানান, ওই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সেই কারণে কলকাতা হাইকোর্টের আর এই মামলা শোনার প্রয়োজন রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন জিপি। বিচারপতি দত্ত জিপি-কে বলেন, সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে কেউ কোনও আবেদন জানিয়ে থাকলে, জিপি তাঁকে সেই আবেদনের প্রতিলিপি সরবরাহ করুন। আগামী সোমবার হাইকোর্টে ওই নথি জমা দেওয়ার কথা। বিচারপতি দত্ত জিপিকে এ-ও জানান, শীর্ষ আদালত সেখানে দায়ের হওয়া মামলায় যে রায় দেবে, সেই রায়ই কার্যকর হবে। বিচারপতি দত্তের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া আবেদনের কপি দেখার পরেই তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement