অপেক্ষার সময় শেষ। লোকসভা নির্বাচনের বিপর্যয় কাটিয়ে এ বার আন্দোলনের লক্ষ্যে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চাইছে সিপিএম।
রাজ্য স্তরে কর্মসূচির গণ্ডি ছাপিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় এই প্রথম বার তৃণমূল স্তরে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দলের নেতাদের পরামর্শ দিল আলিমুদ্দিন। গ্রামে-গঞ্জে আন্দোলনের লক্ষ্যে তাদের হাতিয়ার অবশ্যই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম ও দুর্নীতি।
উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলা পরিষদ এখন শুধু হাতে রয়েছে বামেদের। পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও এখন একচেটিয়া আধিপত্য তৃণমূলের। দু’টি জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ নানা জেলা থেকে পঞ্চায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বুধবার আলিমুদ্দিনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, মদন ঘোষ, নৃপেন চৌধুরীর মতো রাজ্য সিপিএমের পঞ্চায়েত সাব-কমিটির সঙ্গে যুক্ত নেতারা। ওই বৈঠকে রাজ্য নেতারা জেলার প্রতিনিধিদের পরামর্শ দিয়েছেন, তৃণমূল স্তরে বিষয় চিহ্নিত করে এ বার আন্দোলনের সুর চড়াতে হবে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের।
কয়েক মাসের মধ্যেই সিপিএমের সম্মেলন-প্রক্রিয়া শুরু হবে। ক্ষমতার মধু পাওয়া যাবে না বুঝে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ আগেই দল থেকে সরে গিয়েছেন। নিরাপত্তা পাওয়ার আশায় এবং কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে বিজেপি-র দিকে ঝুঁকছে আর এক অংশ। এ সবের বাইরে যাঁরা দলে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকেই যথাসম্ভব ঝাড়াই-বাছাই করে সংগঠন সাজিয়ে নেওয়াই আসন্ন সম্মেলনে সিপিএমের লক্ষ্য। সংগঠনে ধস সব চেয়ে বেশি পঞ্চায়েত স্তরেই। এ বার পঞ্চায়েত স্তরে আন্দোলনের ডাক দিয়ে সিপিএম দেখতে চাইছে, এই কঠিন সময়ে কর্তব্য পালন করে কারা সংগঠনের জন্য উপযুক্ত।
জেলার প্রতিনিধিরা এ দিনের বৈঠকে রিপোর্ট দিয়েছেন, পঞ্চায়েতের অবস্থা ভয়াবহ। বেশির ভাগ জায়গাতেই বিভিন্ন প্রকল্পে মাসছয়েকের টাকা বাকি পড়েছে। যেখানে বামফ্রন্ট সামান্য ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানে তৃণমূল বেশি সমস্যা তৈরি করছে। সূর্যবাবুরা
পরামর্শ দিয়েছেন, পঞ্চায়েতের থমকে যাওয়া কাজ এবং দুর্নীতির ক্ষেত্র চিহ্নিত করে আন্দোলন শুরু করে দিতে হবে স্থানীয় স্তরে। কৃষক নেতা হরেকৃষ্ণ কোঙারের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে আজ, বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত আরও কিছু রূপরেখা দিতে পারেন সূর্যবাবু, মদনবাবুরা।