বিজেপির বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাঁধানো কিংবা রাজ্য ভাগের চক্রান্তের অভিযোগ আগেই তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। এ বার নানা ভাবে আর্থিক লেনদেন চালানোর অভিযোগও তুলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাকে খুনের চক্রান্ত হচ্ছে। সব জানি কে, কোথায় বসে কী করছে? এ ভাবে আমাকে দমানো যাবে না।”
নকশালবাড়িতে দার্জিলিঙের প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়ার সমর্থনে কর্মিসভায় মমতা অভিযোগ করেন, পাহাড়ে ‘টাকার থলি’ নিয়ে এসে বিজেপি ভোটে জিততে চাইছে। ঘণ্টা দু’য়েক পরে সমতলের জলপাইগুড়ির সাহুডাঙ্গিতে তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেন, টাকা নিয়ে প্রার্থী দিয়ে সিপিএমের সুবিধে করে দিতে চাইছে বিজেপি। দলের কর্মীদের কাছে এই বার্তা দিতে কোচবিহার এবং বালুরঘাটে গত লোকসভা ভোটের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, “সিপিএমের থেকে টাকা নিয়ে বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছিল, তাই ওই আসনে আমরা হেরেছিলাম। আর কোচবিহারে আমরা যত ভোটে হেরেছি, বিজেপি সেই পরিমাণ ভোট পেয়েছিল।”
২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ৬৫ হাজারের কিছু বেশি ভোট। ওই কেন্দ্রে জিতেছিল বামেরা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তৃণমূল প্রার্থী হেরেছিলেন ৩৩ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। বালুরঘাটে ৫ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হারেন। সেখানেও বিজেপি পেয়েছিল ৫৯ হাজার ভোট। সে কারণেই বিজেপি বেশি ভোট পেলে তৃণমূলের যাত্রাভঙ্গ হতে পারে আশঙ্কায় দলীয় কর্মীদের দলনেত্রী সতর্ক করার চেষ্টা করেছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
সিপিএম-বিজেপির বোঝাপড়াও নতুন নয় বলে তৃণমূল নেত্রী এ দিন অভিযোগ করেছেন। কেন্দ্রে এনডিএ সরকার থাকাকালীন রাজ্যের বাম সরকারকে অনেক অন্যায় সুবিধে দেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। রাজ্যকে কেন্দ্রের ধার দেওয়ার সীমা ছাড়িয়ে গেলেও, এনডিএ সরকার পূর্বতন বাম সরকারকে টাকা দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। যার জের রাজ্যে পরিবর্তনের পরে ক্ষমতায় এসে তৃণমূলকে ভুগতে হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। বিজেপি-র ‘গুজরাত মডেলকেও’ কটাক্ষ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি যা প্রচার চালাচ্ছে, সবই মিথ্যে। টাকা দিয়ে ওই প্রচার চালানো হচ্ছে বলে তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতের উন্নয়নের কথা বলা হয়। কিন্তু গুজরাতে শিশু মৃত্যুর হারের সঙ্গে রাজ্যের তুলনা করা হোক, তাহলেই সব জানা যাবে। গুজরাত কত টাকা কেন্দ্র থেকে পায়, সে হিসেব চাই, দুই রাজ্যের জনসংখ্যাও এক নয়।”
কেপিপি-র সঙ্গেও বিজেপির সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।