লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে জেলাওয়াড়ি সংগঠনের হাল যাচাই করতে বসছে সিপিএম।
বেশ কিছু দিন ধরে দলের গণসংঠনগুলির বেহাল দশা যে ভোটে লাগাতার বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ, নির্বাচনী পর্যালোচনা করতে বসে তা আগেই টের পেয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। গোটা দেশে দলের বেনজির বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতেই সব রাজ্যেই গণসংগঠনের কাজ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক ও মহিলা ফ্রন্টের কাজকর্ম নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বৈঠকে বসছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। যে কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে কেরল সিপিএম। দু’বছর পরে রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করে আন্দোলনের পথে রাখতে গেলে গণসংগঠনের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সেই লক্ষ্য মাথায় রেখেই আলোচনা হবে এ বার রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠকে।
বামেদের নির্বাচনী ফলাফলের সঙ্গে তাল রেখে ক্রমেই হতশ্রী হয়ে পড়েছে সংগঠনের অবস্থা। একই সঙ্গে শিথিল হয়ে গিয়েছে গণসংগঠনগুলির কাজও। হাতের কাছে আন্দোলনের নানা হাতিয়ার পেয়েও গণসংগঠনগুলি যে পৃথক ভাবে বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি, তা নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে সিপিএমের অন্দরে। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে নতুন ধাক্কা হিসাবে সামনে এসেছে কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দল ছাড়ার প্রবণতা। এই পরিস্থিতির নিরিখেই রাজ্য কমিটিতে গণসংগঠনগুলিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই খোঁজা হবে।
বিষয়ভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে গণসংগঠনগুলির কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, তারই কারণ খোঁজার চেষ্টা হবে এ বারের বৈঠকে। উদাহরণ দিয়ে সিপিএমের এক রাজ্য নেতা বলছেন, প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন সুস্থ থাকাকালীন রাজ্যে শিল্পায়নের দাবিতে গত বছর পথে নেমেছিল যুব সংগঠন। রাজ্যে এখন একের পর এক কারখানা বন্ধ হচ্ছে, তোলাবাজি-সহ শাসক দলের দাপটে শিল্পের নাভিশ্বাস উঠছে। তা সত্ত্বেও শিল্পের দাবিতে ‘ইতিবাচক’ আন্দোলন করে তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না! এই দুর্বলতা চিন্তায় রেখেছে আলিমুদ্দিনকে।
রাজ্য কমিটিতে এ বার অবধারিত ভাবেই আলোচনায় আসতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরের পরিস্থিতি। বহিষ্কৃত সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ জেলায় সিটুরও নেতা ছিলেন। তাঁর অনুগামীরা ঝাঁক বেঁধে দল ছাড়ায় সিটু বা কৃষক সভার উপরে কেমন প্রভাব পড়বে, সব জেলা থেকেই তার সার্বিক খতিয়ান নিতে চাইছেন বিমান বসুরা।