রাজ্যে তিন বা চার দফায় লোকসভা ভোট হতে পারে। তবে কোনও পর্বেই ২২০ কোম্পানির বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পতের বৈঠকে এই ইঙ্গিত মিলেছে।
কমিশন বলেছে, স্পর্শকাতর সব বুথে দিনভর ছবি তুলে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকবে। তৎক্ষণাৎ তা দেখা যাবে কমিশনের অফিসে। দিল্লির বক্তব্য, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী হয়তো দেওয়া যাবে না। কিন্তু লাইভ টেলিকাস্ট বা সরাসরি সম্প্রচার ও মোবাইল ভিডিও ক্যামেরার সাহায্যে প্রতিটি বুথে কখন কী ঘটছে, তা সহজেই জানা যাবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কমিশন।
কমিশন নবান্নকে জানিয়েছে, ২০০৯ সালে যে-ধাঁচে ভোট হয়েছিল, এ বার সেটাই অনুসরণ করা হবে। অর্থাৎ সর্বাধিক ২২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যাবে। প্রতিটি স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রেই যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে, কমিশন সেটা নিশ্চিত করতে চায়। রাজ্যে ক’দফায় ভোট হবে, বাহিনী মোতায়েনের কথা মাথায় রেখেই তা ঠিক করা হবে।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ২২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট পরিচালনা করতে অসুবিধা নেই। কারণ, প্রতি দফায় অন্তত ২০০ কোম্পানি বাহিনী থাকার অর্থ, তিন দফায় ভোট হলে ৬০০ কোম্পানি জওয়ান পাওয়া যাবে।
ওই বৈঠকে রাজ্যের তরফে তিন দফা প্রস্তাব দেওয়া হয় কমিশনকে। প্রথমত, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বৈঠকে জানান, বাংলাদেশে নির্বাচন-পরবর্তী অশান্তি অব্যাহত। তাই লোকসভা ভোটের আগে যেন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বিএসএফ তুলে নেওয়া না-হয়।
দ্বিতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকার সঙ্গেই ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের মাওবাদী প্রভাবিত অঞ্চলের ভোট এক দিনে করার দাবি জানিয়েছে রাজ্য। স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, মাওবাদী এলাকার ভোট এক দিনে না-হলে পড়শি রাজ্য থেকে মাওবাদীরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে হামলা চালাতে পারে। নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের স্বার্থেই প্রতিবেশী তিন রাজ্যের মাওবাদী এলাকার সঙ্গে বাংলার সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে এক দিনে ভোট হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে কেএলও উত্তরবঙ্গে গোলমাল বাধাতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই রাজ্যের আর্জি, ভোটের প্রস্তুতি পর্ব থেকেই উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় বাড়তি সতর্কতার ব্যবস্থা হোক।
কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যের হাতে ৪৮ থেকে ৫০ হাজার পুলিশ আছে বলে জানানো হয়েছে। তার অর্ধেক ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে। বাকি পুলিশকর্মীরা সাধারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করবেন।