অভিযোগ না নিয়ে টাকা ধরাল পুলিশ

কাপড়ের গাঁট কিনে ফেরার সময়ে শিয়ালদহ থেকে উঠেছিলেন আপ নৈহাটি লোকালে। ভোরের ট্রেন বেশ ফাঁকা দেখে একটি কামরাই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ছাড়ার পরেই কারশেডের কাছে তাঁকে ঘিরে ধরে চার-পাঁচ জন যুবক। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ওই ব্যক্তির সর্বস্ব, এমনকী কাপড়ের গাঁটটি নিয়েও চম্পট দেয় ওই তারা। এমন ঘটনা অবাঞ্ছিত হলেও হয়তো অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু তার পরের পর্বে যা ঘটল, তা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির দিকে আঙুল তুলে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

কাপড়ের গাঁট কিনে ফেরার সময়ে শিয়ালদহ থেকে উঠেছিলেন আপ নৈহাটি লোকালে। ভোরের ট্রেন বেশ ফাঁকা দেখে একটি কামরাই বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ছাড়ার পরেই কারশেডের কাছে তাঁকে ঘিরে ধরে চার-পাঁচ জন যুবক। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ওই ব্যক্তির সর্বস্ব, এমনকী কাপড়ের গাঁটটি নিয়েও চম্পট দেয় ওই তারা। এমন ঘটনা অবাঞ্ছিত হলেও হয়তো অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু তার পরের পর্বে যা ঘটল, তা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতির দিকে আঙুল তুলে দেয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় সর্বস্ব খুইয়ে ব্যারাকপুর জিআরপি থানায় অভিযোগ জানাতে যান ব্যারাকপুরের ঘি-দহের বাসিন্দা নাজির মণ্ডল। কিন্তু পুলিশ তাঁকে বলে শিয়ালদহ জিআরপি থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। কারণ হিসেবে তারা জানায়, ঘটনাটি শিয়ালদহ কারশেডের কাছে ঘটায় এফআইআর করতে হবে সেখানেই। কিন্তু নাজির সেখানে যাবেন কী করে? তাঁর তো সমস্তই লুঠ হয়ে গিয়েছে। এ কথা শুনে পুলিশই তাঁর হাতে নগদ ৩০ টাকা দিয়ে বলে টিকিট কেটে শিয়ালদহ চলে যেতে। আর নাজিরও এক প্রকার বাধ্য হয়েই ফের একটি ডাউন ট্রেনে শিয়ালদহে এসে অভিযোগ জানান।

অথচ নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের কোথাও কোনও ঘটনা ঘটলে কাছাকাছি যে কোনও থানায় অভিযোগ জানানো যায়। রেলের এলাকাও রাজ্য পুলিশের দায়িত্বে থাকায় সেখানে এটাই নিয়ম। তাই প্রশ্ন উঠেছে, পকেটমারি-ছিনতাই রোধ করা তো দূর অস্ৎ, নিজের থানা এলাকায় অপরাধের সংখ্যা না বাড়াতেই কি নাজিরকে শিয়ালদহে পাঠাল ব্যারাকপুর জিআরপি?

Advertisement

যাত্রীদের অবশ্য অভিযোগ, রেল স্টেশনের থানাগুলি এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে বেশির ভাগ সময়েই যাত্রীদের ফিরিয়ে দেয়। যেখানকার ঘটনা, সেখানে অভিযোগ জানাতে বলে। ফলে অভিযোগ জানাতে দেরি হয়, তদন্তও শুরু হয় দেরিতে। তাতে অপরাধীরাও গা-ঢাকা দেওয়ার যথেষ্ট সময় পেয়ে যায়, ধরাও পড়ে না।

এ বিষয়ে ব্যারাকপুর জিআরপি-র অফিসারেরা অবশ্য জানান, ওই অভিযোগকারীর কাছে বাড়ি যাওয়ার টাকা ছিল না। মানবতার খাতিরেই তাঁকে টাকা দেওয়া হয়। আর ঘটনাটি শিয়ালদহ জিআরপি থানা এলাকায় ঘটায় সেখানে গিয়েই অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে।

এ দিকে নাজির জানিয়েছেন, শিয়ালদহ জিআরপি তাঁর অভিযোগ নিয়েছে। বিকেলে ফের তাঁকে অপরাধীকে শনাক্ত করতে থানায় আসতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement