সৈকত মণ্ডল
চিনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। সব ঠিকঠাকই চলছিল। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের আতঙ্কে হস্টেলের ঘরে কার্যত বন্দি সৈকত মণ্ডল। এই পরিস্থিতিতে গোসাবার কুমিরমারি গ্রামে তাঁর বাড়ির লোকের দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়।
২০১৭ সালে চিনের শিঙিয়াং মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন সৈকত। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ছেলেকে দেশের বাইরে পাঠাতে আপত্তি ছিল মা সুমিত্রার। পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক সৈকতের বাবা নিখিলেশ অবশ্য আপত্তি করেননি। অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ছেলেকে বিদেশে পাঠান তাঁরা।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে চিনে। বিশ্বের অন্যান্য দেশও ত্রস্ত। ইতিমধ্যে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ছেলে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসুক, চাইছেন সৈকতের বাবা-মা।
তবে ছেলের কাছ থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, সুরক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। হস্টেলের ঘর থেকে কার্যত বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে থার্মোমিটার। জ্বর এলেই পড়ুয়ারা যাতে নিজেরা দেখে নিতে পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা। সকলকে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের যাতে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে কিছু কেনাকাটা করতে যেতে না হয়, সে জন্য ক্যাম্পাসের মধ্যেই একটি অস্থায়ী বাজার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
সৈকতের মা বলেন, ‘‘প্রতিদিন খবরে যা শুনছি, তাতে মন কিছুতেই মানতে চাইছে না। ও ফিরে এলেই এখন শান্তি পাই।” নিখিলেশের কথায়, ‘‘প্রতিদিনই তিন-চার বার করে কথা হচ্ছে ছেলের সঙ্গে। ভালই আছে। কিন্তু আমাদের মনে একটা ভয় কাজ করছে।’’
একই ভাবে আতঙ্কিত আর এক ছাত্রের মা রিতা সিংহ। তপসিয়ার বাসিন্দা রিতার ছেলে ধ্রুব সৈকতের সঙ্গে একই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন। রিতা বলেন, ‘‘চিন্তা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কিছু করার নেই। হস্টেলেই বরং ওরা নিরাপদে রয়েছে। ওখান থেকে বেরোতে গেলে অন্যান্য মানুষের সংস্পর্শে এলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে।”