রোগীর পরিবারের সদস্য সেজে কিডনি পাচারের ছক! ধৃত যুবক

ধৃতের নাম সুমন সিংহ। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরের মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে এসেছিলেন মহম্মদ ইসমাইল, সঞ্জিত রায় এবং শর্মিষ্ঠা ঘোষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

রোগীর পরিবারের সদস্য সেজে প্রবেশপত্র জোগাড় করে হাসপাতালে ঢুকে কিডনি পাচারের ছক কষছিল এক যুবক। তবে বেশি দূর এগোতে পারল না সে। যুবকের গতিবিধি
দেখে সন্দেহ হওয়ায় রোগীর পরিজনেরাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে বিষয়টি আনেন। মঙ্গলবার রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। প্রতারণার অভিযোগে ওই রাতেই পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে ওই যুবককে।

Advertisement

ধৃতের নাম সুমন সিংহ। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরের মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে এসেছিলেন মহম্মদ ইসমাইল, সঞ্জিত রায় এবং শর্মিষ্ঠা ঘোষ। তিন জনই কিডনির অসুখে ভুগছেন। হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটের বাইরে এক যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন ওই রোগীদের পরিজনেরা। পুলিশ জানিয়েছে, নিজেকে সেকেনদরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধির পরিচয় দিয়ে ওই যুবক তিন রোগীকে কিডনি প্রতিস্থাপনের টোপ দেয়।

তদন্তকারীরা জানান, ধৃত যুবক তিন জন রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জানায়, তাকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৩০০ টাকা দিলে দক্ষিণ ভারতের এক নামী বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করে দেবে। মহম্মদ ইসমাইল ওই যুবকের কথা মতো রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ১৩০০ টাকা দিয়েও দেন তাকে। এর পরে সঞ্জিত ও শর্মিষ্ঠার থেকেও একই টোপ দিয়ে
রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ মোটা টাকা দাবি করে ওই যুবক। ওই যুবকের হাসপাতাল থেকে এ ভাবে টাকা সংগ্রহ করা এবং তার গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় সঞ্জিত ও শর্মিষ্ঠার বাড়ির লোকেরা মেডিকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রাতেই ঘটনাটি জানান। দুই রোগীর পরিবারের থেকে অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষণাৎ মেডিকার তরফে পূর্ব যাদবপুর থানায় ফোন করে গোটা ঘটনা জানানো হয়। রাতেই সুমনকে হাসপাতাল থেকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে বুধবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মহম্মদ ইসমাইলের আত্মীয় সেজে তাঁর থেকে হাসপাতালে ঢোকার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে সুমন। তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার বিকেলে মেডিকার ডায়ালিসিস ইউনিটে ঢোকে সে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রতারণা চক্রের এই ঘটনায় সুমন ছাড়াও কৌস্তুভ দাশগুপ্ত-সহ আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে। বুধবার রাত পর্যন্ত কৌস্তুভ ও বাকিদের ধরতে পারেনি পুলিশ।

মেডিকা হাসপাতালের গ্রুপ হেড কোমল দসেরা বলেন, ‘‘তিন বছর আগেই আমাদের হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও এক শ্রেণির চক্র অন্য হাসপাতালের নাম করে এখানে এসে অসাধু ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার রাতেও দুই রোগীর পরিবারের তরফে এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশে খবর দিই।’’ লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, এর পিছনে বড় চক্রের হাত রয়েছে। সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের অন্যদের খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement