প্রলয়কান্তি সাঁতরা। প্রধান শিক্ষক, মেউদিপুর হাইস্কুল, খড়্গপুর গ্রামীণ
শুধু ছাত্রছাত্রী নয়, মঙ্গলবার দিনটা আমাদের সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও বড় আনন্দের ছিল। স্কুলের দরজা আমাদের জন্য পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ঠিকই। মাঝে দু’মাস কিছুটা ক্লাস হয়। মাসে মাসে স্কুলে এসে মিড ডে মিলের সামগ্রী বিলি করেছি। সাইকেল, পোশাক, বই, খাতা, পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়েছি অভিভাবকদের। উত্তরপত্র মূল্যায়নও করেছি। কিন্তু যাদের জন্য, যাদের নিয়ে এই পথচলা, সেই ছাত্রছাত্রীরাই তো ছিল না।
বহু দিন পরে শিক্ষাঙ্গন আজ আবার কলতানে পরিপূর্ণ। প্রথম দিন বলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কমই ছিল। প্রতিটি ক্লাসে গড়ে ১২-১৪ জন পড়ুয়া এসেছিল। অথচ ক্লাসে গড়ে ছাত্রছাত্রী রয়েছে ৭৫-৮০ জন। আমরা প্রত্যেককে মাস্ক আর চকোলেট দিয়েছি। ওরা খুব খুশি।
হাসি ফুটেছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। ক্লাসরুমে পড়াতে না পারার একটা আক্ষেপ বয়ে বেড়াতে হচ্ছিল। সেটা থেকে মুক্ত হলাম। পড়ুয়াদের কলতানে যেন প্রাণ ফিরল আমাদেরও। আমি ভৌতবিজ্ঞানের ক্লাস নিই। এ দিন দু'টো ক্লাস নিয়েছি। প্রথমে দশম শ্রেণির, পরে নবম শ্রেণির। এই সময়টা অনলাইন ক্লাস চললেও ছাত্রছাত্রীরা মূলত টিউশন-নির্ভর হয়ে গিয়েছিল। বহু পরিবারে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। অনেকেই চেয়েও পড়াশোনার মধ্যে থাকতে পারেনি। তারা খুব করে চাইছিল স্কুলটা খুলুক। এ দিন ক্লাসে গিয়ে সেটা বুঝতে পেরেছি। আশা করি, বুধবার থেকে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়বে। কচিকাঁচাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে থাকবে শিক্ষাঙ্গন।
প্রলয়কান্তি সাঁতরা
প্রধান শিক্ষক, মেউদিপুর হাইস্কুল, খড়্গপুর গ্রামীণ