নবান্নে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের। ছবি: সংগৃহীত।
সোমবার নবান্ন অভিযানে গিয়েছিলেন ২০১৬ সালে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিশ তাঁদের আটক করে শিবপুর থানায় নিয়ে গিয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ২০১৬ সালের শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা প্যানেলে নাম থাকা এই ১,৬০০ জন প্রার্থীকে অনুমোদনপত্র দেওয়া হয়েছে আগেই। তবে এখনও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এসএসসির ৬০০০ সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে শুনানি রয়েছে। ওই শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা প্রার্থীদের আশঙ্কা, ওই সুপারনিউমেরারি প্যানেলের ৬,০০০ জনেরই নিয়োগ বাতিল হয়ে গেলে তাঁরাও চাকরি হারাবেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও সে ক্ষেত্রে তাঁদের চাকরি বাতিল হতে পারে। এই নিয়েই নবান্ন অভিযানে গিয়ে আটক হলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
নবান্ন অভিযানকারী শারীরিশিক্ষা, কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের হয়ে বলুক রাজ্য সরকার। তারা স্পষ্ট করুক যে, সুপারনিউমেরারি প্যানেলে থাকা ৬০০০ জনের মধ্যে নাম থাকলেও, তাঁদের ১,৬০০ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তাঁদের অনুমোদনপত্রও দিয়েছিল সরকার। এখনও নিয়োগপত্র পাননি। অভিযানকারী প্রার্থীদের দাবি, এই বিষয়টি মঙ্গলবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে জানাক রাজ্য। সে কথা বলতে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে নবান্নে গিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের আটক করে শিবপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মহিলা প্রার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন পুরুষ পুলিশকর্মী।
২০১৬ সালে এসএসসির প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। ‘এসএসসি যুব-ছাত্র অধিকার মঞ্চ কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা’র সম্পাদক সাফিয়া খাতুন জানান, ২০১৬ সালে ৬০০০-এর বেশি সুপারনিউমেরারি (অতিরিক্ত শূন্য) পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল এসএসসি। তার মধ্যেই ১,৬০০ পদ ছিল শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার। ৮৫০টি পদ ছিল শারীরশিক্ষার জন্য। ৭৫০টি পদ ছিল কর্মশিক্ষার জন্য। ২০১৭ সালে নিয়োগের পরীক্ষা হয়। ২০১৮ সালে শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। ২০২২ সালে অনুমোদনপত্র পান শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও এখনও পর্যন্ত তাঁরা হাতে কোনও নিয়োগপত্র পাননি বলে জানিয়েছেন সাফিয়া। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও মামলা নেই। যেহেতু একটাই বিজ্ঞপ্তি বার হয়েছিল, তাই আমাদেরও চাকরি যেতে পারে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানায়নি যে, শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষার শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আলাদা। তাঁদের অনুমোদনপত্র দেওয়া হয়েছে। শুধু নিয়োগপত্রই দেওয়া হয়নি। সাফিয়ার কথায়, ‘‘রাজ্য এই সুপারনিউমেরারি মামলায় মেন পার্টি। তাই সরকারই বলুক, আমরা আলাদা। আমাদের কথা বলুক, যাতে পুরো প্যানেল বাতিল করা না হয়। আমাদের কথা শোনার পরে বিচারপতি বিচার করুন।’’