কুচকাওয়াজের মুখ এ বার মহিলারাই

এ দিন কলকাতাতেও কুচকাওয়াজের মুখ হয়ে উঠেছেন নারীরাই। বিএসএফের পাশাপাশি সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীর ট্যাবলো এবং প্যারেডে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

নারীশক্তি: প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বায়ুসেনার ট্যাবলো। শুক্রবার রেড রোডে।— নিজস্ব চিত্র।

একের পর এক মোটরবাইক আসছে। তাতে নানা ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে বা বসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে স্যালুট ঠুকছেন বিএসএফের মহিলা জওয়ানেরা। শুক্রবার দিল্লির রাজপথে ‘সীমা ভবানী’ বাহিনীর এই কসরত তাক লাগিয়েছে দেশ-বিদেশের অতিথিদের।

Advertisement

এ দিন কলকাতাতেও কুচকাওয়াজের মুখ হয়ে উঠেছেন নারীরাই। বিএসএফের পাশাপাশি সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীর ট্যাবলো এবং প্যারেডে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ দেশে প্রতিরক্ষা এবং পুলিশ বললে সাধারণত যে ছবিটা সামনে আসে, এ বছর কুচকাওয়াজে মহিলাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি বাহিনীর সেই চরিত্র বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

আমেরিকার মতো দেশে সামরিক বাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ দেশে আধা সামরিক ও সামরিক বাহিনীতে মহিলারা আছেন। তবে বহু ক্ষেত্রে তাঁরা পুরুষদের সমমর্যাদা পেলেও মাঠে-ময়দানে সামনের সারিতে থেকে কাজ করার সুযোগ পান না। সামরিক বাহিনীতে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতিও মহিলাদের নেই। সম্প্রতি সেই রীতিতে আংশিক বদল এনেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেনা ও নৌসেনায় এখনও সুযোগ না পেলেও বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমানের চালক হিসেবে মহিলাদের নিয়োগ করা হচ্ছে। এ দিন কলকাতার রেড রোডে বায়ুসেনার ট্যাবলোয় সেই বদলের প্রতীক হিসেবেই দেখা গেল জি-স্যুট (যুদ্ধবিমানের চালকের পোশাক) পরা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট জ্যোৎস্না চিকারাকে। বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান, অবসরপ্রাপ্ত এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহার সময়ে মহিলাদের যুদ্ধবিমানের পাইলট হিসেবে নিয়োগ শুরু হয়। সেনা সূত্রের খবর, জ্যোৎস্না নিজে যুদ্ধবিমানের পাইলট নন। কিন্তু তাঁকে প্রতীকী হিসেবেই এ দিন উপস্থাপন করা হয়েছে। অরূপবাবুর নিজের রাজ্যেই এই প্রতীকী উপস্থাপনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সেনা অফিসারদের অনেকে।

Advertisement

দিল্লিতেও বায়ুসেনার ট্যাবলোয় ছিলেন তিন মহিলা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ছন্দা, অদিতি এবং অমরদীপ। কুচকাওয়াজে ছিলেন ফ্লাইং অফিসার শ্রুতি। যাঁদের দেখিয়ে ঘোষক বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষায় মহিলাদের ক্ষমতায়নই যেন ফুটে উঠছে।’’ এ দিন দিল্লিতে স্থলসেনার ক্যাপ্টেন শিখা যাদব এবং নৌসেনার সাব-লেফটেন্যান্ট রূপা ছিলেন প্রথম সারিতে। উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং আইটিবিপি-র কুচকাওয়াজেও মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আইটিবিপি-র ‘হিমবীর’ ট্যাবলোয় পুরুষ কম্যান্ডোদের সঙ্গেই ছিলেন মহিলারাও।

সেনাকর্তাদের অনেকেই বলছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়ন তো সাউথ ব্লকেও স্পষ্ট হয়েছে উঠেছে। খোদ প্রতিরক্ষামন্ত্রীই মহিলা। মন্ত্রকের মুখপাত্র হিসেবেও মহিলা অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।

পুরুষদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে সীমান্তে দেশরক্ষার সুযোগ চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব এ দেশের মহিলারা। এ দিন কুচকাওয়াজে নারী ক্ষমতায়নের যে ছবিু ফুটে উঠেছে, তার পরে আগামী দিনে যুদ্ধক্ষেত্রেও কি পুরুষদের পাশে অস্ত্র হাতে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবেন নারীরা?

প্রশ্নটা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement