স্লগ ওভারে ঘুরে দাঁড়িয়ে জমিয়ে ব্যাটিং শীতের

থার্মোমিটারের পারদ বলছে, ২৪ ঘণ্টার ফারাকে কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা কমেছে মাত্র ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ায় ফিরে এসেছে শীতের আমেজ। সৌজন্যে উত্তুরে হাওয়া। আবহাওয়ার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আবহবিদেরাও বলছেন, ইনিংসের শেষ দিকে এসে ক্রমশ থিতু হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে শীত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৬ ১২:০৯
Share:

মাথা বাঁচিয়ে। বৃহস্পতিবার শহরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

থার্মোমিটারের পারদ বলছে, ২৪ ঘণ্টার ফারাকে কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা কমেছে মাত্র ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ায় ফিরে এসেছে শীতের আমেজ। সৌজন্যে উত্তুরে হাওয়া। আবহাওয়ার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আবহবিদেরাও বলছেন, ইনিংসের শেষ দিকে এসে ক্রমশ থিতু হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে শীত।

Advertisement

বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে চার ডিগ্রি বেশি। এই সামান্য ফারাকে শীতের বিশেষ হেরফের হয় না। কিন্তু আমজনতা বলছে, বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার শীত একটু বেশিই মালুম হয়েছে। আবহবিদেরা বলছেন, বুধবার বিকেল থেকেই হিমেল উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করে। পরদিন সকাল থেকেও মালুম হয়েছে উত্তুরে হাওয়া। তার ফলেই শীতের অনুভূতি মিলেছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, আজ, শুক্রবার থেকে আরও নামবে তাপমাত্রা। এ সময়ে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসকেই স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে ধরছে হাওয়া অফিস। এখন উত্তুরে হাওয়ার যা মতিগতি, তাতে আগামী দিন দু’য়েকের মধ্যেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কোঠায় পৌঁছে যেতে পারে মনে করছেন গোকুলবাবু।

Advertisement

দিল্লির মৌসম ভবন সূত্রে খবর, ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা দুর্বল হওয়ায় এ বার উত্তর ভারতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েনি। ফলে সেখান থেকে কনকনে উত্তুরে হাওয়া বয়ে আসছিল না। তার উপরে দুর্বল ঝঞ্ঝার প্রভাবে মধ্য ভারত, উত্তর ভারতে ঘূ্র্ণাবর্ত দানা বাঁধায় উত্তুরে হাওয়া বাধা পাচ্ছিল। তার বদলে সাগর থেকে জোলো হাওয়া ঠেলে ঢুকে পড়ছিল দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে। আর মেঘ জমতে থাকায় রাতের তাপমাত্রা কমছিল না। এ ছাড়া, গত কয়েক দিন ধরে মধ্যপ্রদেশের একটি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে গুমোট গরমও পড়েছিল।

আবহবিদদের অনেকে বলছেন, ওই ঘূর্ণাবর্তটিই আবার শীতকে টেনে এনেছে। কী ভাবে? তাঁদের ব্যাখ্যা, ওই ঘূর্ণাবর্তটি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি নামিয়েছে। ফলে আকাশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এক দিকে যেমন উত্তুরে হাওয়া ঢুকছে, তেমনই পরিষ্কার আকাশে রাতে মাটি থেকে বেশি পরিমাণে তাপ বিকিরিত হচ্ছে। আর এই দু’য়ের ফলেই থিতু হচ্ছে শীত।

এত কিছুর পরেও কিন্তু শীত নিয়ে প্রশ্ন যাচ্ছে না অনেকের। সারা মরসুম ধুঁকে-ধুঁকে কাটিয়ে শেষ লগ্নে গা ঝাড়া দিলেও শীতের ঘাটতি মিটবে কি? বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাওয়া যে ভাবে বর্ষার ঘাটতি বা বাড়তি হিসেব করে, সে ভাবে শীতের কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তাই খাতায়-কলমে শীতে ঘাটতি হয়েছে, তেমনটা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা যায় না। তবে সব্জি চাযের জন্য বা উপভোগের জন্য যে সময়টা শীতের প্রয়োজন ছিল, তখন তা মেলেনি। সে দিক থেকে এ বার শীতে ঘাটতি রয়েছে। শেষ লগ্নে জোরে ব্যাট চালালেও সেই ‘ঘাটতি’ মেটার আশা নেই বলেই মনে করছেন অনেকে।

তবে শীত-প্রত্যাশী বাঙালিকে গোকুলবাবু জানাচ্ছেন, আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী সপ্তাহেও শীত থাকবে। তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে আরও কিছুটা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement