২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে রাজ্যে আসতে চান মল্লিকা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে এখনও উত্তপ্ত রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতি। ওই হামলাকে ব্যক্তিগত লজ্জা হিসেবে দেখছেন বিজেপি সভাপতির বাঙালি স্ত্রী মল্লিকা। রবিবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে মল্লিকা বললেন, ‘‘আমার স্বামী বাংলার জামাই। আর তাঁর উপরে হামলা নিয়ে বাঙালি হিসেবে আমি লজ্জিত।’’ এই ঘটনার পর, তিনি নিজে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে রাজ্যে আসবেন বলেও জানালেন মল্লিকা। সত্যিই আসবেন? রাজনীতির মঞ্চে তো তাঁকে দেখা যায় না? প্রশ্ন করতে না করতেই জবাব, ‘‘কেন নয়? নিশ্চয়ই আসব। আমাকে তো আসতেই হবে। এটা তো দেখাতেই হবে যে আমরা বাঙালিরাও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছি। বাঙালি হিসেবে মাথা উঁচিয়ে রয়েছি।’’
গত বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে শিরাকোল ও দস্তিপুরে হামলার মুখে পড়েছিলেন নড্ডা। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তার পরেও উত্তাপ কমেনি। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে দিল্লিতে তলব করেছে অমিত শাহের মন্ত্রক। এ ছাড়াও ৩ আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে নিতে চেয়ে নবান্নকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। এই পরিস্থিতিতে নড্ডার কনভয়ে হামলাকে শুধু রাজনৈতিক কারণে নয়, ব্যক্তিগত ‘অপমান’ হিসেবেও দেখছেন মল্লিকা। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামীর এমন অপমানের জন্য আমি নিজেও খুব অপমানিত বোধ করছি। বাঙালির মেয়ে হয়ে আমার মনে হচ্ছে, বাংলায় যদি এই রকম হয়, তবে আমাদের সবাইকে বাংলায় আসতেই হবে। অন্যায় আর অত্যাচার থেকে বাঁচানোর জন্য।’’
ডায়মন্ড হারবারের পথে নড্ডার কনভয়ে হামলা। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
মল্লিকা নিজে সক্রিয় রাজনীতি না করলেও, রাজনৈতিক পরিবারের বড় হয়ে উঠেছেন। তাঁর মা জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৭২ সালে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় জনসঙ্ঘের প্রার্থী হিসেব নির্বাচন লড়েন। বিজেপি-র জন্ম হওয়ার আগে ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টির টিকিটে জব্বলপুর সেন্ট্রাল আসন থেকে বিধায়ক হন। পরে ১৯৯০ ও ১৯৯৩ সালে বিজেপির টিকিটে জয় পান পশ্চিম জব্বলপুর কেন্দ্র থেকে। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে মন্ত্রীও থেকেছেন। ১৯৯৯ সালে লোকসভায় যান জয়শ্রী। সেই সময়ে জয়শ্রীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে মল্লিকা বলেন, ‘‘আমার মা মমতাদিদির সঙ্গে সাংসদ ছিলেন। মমতাদিদি জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাল ভাবেই চিনবেন। কারণ, দুই বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গে সংসদে ছিলেন।’’ একই সঙ্গে নড্ডাকে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বাংলার বাইরে আমার মা কত সম্মান পেয়েছেন। আর এখন দেশের লোকেরা বাংলায় গেলে সে বহিরাগত হয়ে গেল?’’
আরও পড়ুন: পার্থর সঙ্গে বৈঠক, ‘আবার ডাকলে আসব’, বললেন বিক্ষুব্ধ রাজীব
আরও পড়ুন : ডুয়ার্সেও ‘দাদার অনুগামী’দের পোস্টার, রং নিয়ে জল্পনা
‘মমতাদিদি’র প্রতিও তাঁর ক্ষোভ রয়েছে বলে রবিবার জানান জয়শ্রী। তাঁর কথায়, ‘‘মমতাদিদি আমার স্বামীর নামের সঙ্গে নাড্ডা, গাড্ডা ইত্যাদি যে সব বলেছেন সেটাও লজ্জার বিষয়। ব্যাক্তিগত ভাবে কাউকে এই ভাবে আক্রমণ খুবই খারাপ আর আমাদের কাছে এটা খুবই অপমানের বিষয় হয়েছে।’’