—ফাইল ছবি।
ট্রেন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার লিখিত অনুমতিপত্র (মেমো) মালগাড়ির চালককে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে গতিবেগ কত রাখতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা ছিল না কেন, উঠেছে প্রশ্ন। রেলের একাংশের দাবি, সিগন্যাল যা-ই থাকুক, চালকের হাতে ‘মেমো’ দিয়ে ট্রেন চালানোর ছাড় দেওয়ার মানে ট্রেনের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটারে বেঁধে রাখতে হবে। গত সোমবার, দুর্ঘটনার দিন কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সে মতোই চলছিল।
প্রশ্ন উঠেছে, মালগাড়ির চালক কি নিয়মটা জানতেন না? নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন, মালগাড়ির সহকারী চালক মনু কুমারের কাছ থেকে তদন্তকারীরা এই গতিবেগের বিষয়টি নিয়েই বিশেষ করে জানতে চান।
এক মহিলা আধিকারিক-সহ তিন সদস্যের তদন্তকারী দলটি বৃহস্পতিবার রাতে মনু কুমারের সঙ্গে কথা বলে। সূত্রের দাবি, মনু কুমারের কাছ থেকে প্রধানত জানতে চাওয়া হয়, কী পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা ঘটল এবং সিগন্যাল খারাপ রয়েছে তা জানিয়ে ‘মেমো’ দেওয়ার পরেও কেন গাড়ির গতি বেশি ছিল? নার্সিংহোমে ভর্তির পর থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন জনের কাছে মনু কুমারের টুকরো টুকরো কথার সূত্রে দুর্ঘটনার ঠিক আগের পরিস্থিতির কথা কিছুটা জানা গিয়েছে। পরিবারের দাবি, মনু ‘অনিয়ম’ করেননি। কিন্তু মালগাড়ির গতি কেন বেশি ছিল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
রেল আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্ন রয়েছে ‘বিতর্কিত’ ‘টি/এ ৯১২ মেমো’-র বয়ান নিয়েও। তাঁদের দাবি, সিগন্যাল বিকল থাকলে গাড়ির গতি কত রাখতে হবে, তা ‘মেমো’-তে উল্লেখ নেই। রেলের অন্য বিভাগের মেমোতে গতি কত হবে, তার উল্লেখ থাকে বলে ওই আধিকারিকদের দাবি। তাঁরা দাবি করেন, আগে সিগন্যাল খারাপ হলে ‘মেমো’ দেওয়ার পদ্ধতিতে ২০২৩ সালে ৬ জানুয়ারি নতুন নিয়ম কার্যকর হয়েছে। তাতে এই পরিস্থিতিতে চালক ঠিক কী করবেন, তার উল্লেখ নেই। আবার রেলেরই অন্য অংশের পাল্টা বক্তব্য, নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পরে বছর ঘুরে গিয়েছে, এ ধরনের সমস্যায় ট্রেন চলেছে কী ভাবে? দুর্ঘটনাও তো ঘটেনি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘রেলওয়ে সেফটি কমিশনার অধীনে তদন্ত চলছে। তাঁরাই সব দেখছেন।’’
সূত্রের দাবি, এ দিন থেকে দুর্ঘটনার পুনর্নির্মাণ শুরু করেছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার (সিআরএস) জনককুমার গর্গ। প্রাথমিক ভাবে ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের কাজ শুরু হয়েছে। তদন্তে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য যাচাইয়ের কাজে পদস্থ রেল আধিকারিকদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে বলে খবর। ইতিমধ্যে রাঙাপানি স্টেশনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ডিআরএম (কাটিহার) সুরেন্দ্র কুমার।