ছাড় কেন সরকারি ক্ষেত্রে

সরকারি হাসপাতালের পরিবর্তে গরিব-মধ্যবিত্তকে ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে। কেন? শাসক দলের কোনও প্রভাবশালী ফোন না করলে কেন শয্যা মেলে না সরকারি হাসপাতালে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

সরকারি হাসপাতালের পরিবর্তে গরিব-মধ্যবিত্তকে ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমে। কেন? শাসক দলের কোনও প্রভাবশালী ফোন না করলে কেন শয্যা মেলে না সরকারি হাসপাতালে? সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষানিরীক্ষা-অস্ত্রোপচারের সুযোগ পেতে কেন গড়িয়ে যায় ৬ মাসেরও বেশি সময়?

Advertisement

বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে আইনের শাসনে বাঁধতে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিল পাশ করালেন বিধানসভায়, তখন বিরোধী বেঞ্চ থেকে ধেয়ে এল এমনই সব প্রশ্ন। তাঁদের দাবি, বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলিকে কেন বাঁধা হবে না একই আইনে। কারণ, সেখানে পরিষেবা না পেয়ে বাধ্য হয়েই তো মানুষকে ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতালগুলির কাছে।

বিরোধীরা আগে থেকেই দাবি করছিলেন, বর্তমান বিলটিকে মমতা ‘ঐতিহাসিক’ বলে দাবি করলেও আদতে এটা নতুন মোড়কে বাম আমলে তৈরি পুরনো আইনটাই। তাই এত ঝঞ্ঝাট না করে পুরনো আইনে সংশোধন আনলেও চলত।

Advertisement

তা ছাড়া, বাম জমানায় পাশ হওয়া আইনটিই তৃণমূল সরকার কাজে লাগালে মানুষের হয়রানি ৬ বছর আগেই বন্ধ করা যেত। শুধু তা-ই নয়, মমতা স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৫ সালে বাম জমানার ওই বিলের উপরেই সংশোধনী এনে ওষুধের দোকান বা অন্যত্র ডাক্তারদের একক চেম্বার ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট’-এর সংজ্ঞার আওতার বাইরে আনা হয়েছিল। বিরোধীদের বক্তব্য, আগের বিলটি যদি এতই অকেজো ছিল, তা হলে তার উপরে কেন সংশোধন এনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী?

আরও পড়ুন: ‘শোধরানোর সুযোগ দিচ্ছি খারাপদের, নয়তো আইন আইনের পথে চলবে’

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘এটা কোনও ভাবেই রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকদের যুদ্ধ নয়। লড়াইটা সঠিক পরিষেবা পাওয়ার। সরকারের মনোভাবে সেটা মাঝে মাঝে গোলমাল হয়ে যাচ্ছে!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, নবান্নের রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে সরকারি হাসপাতালে ‘বেড অকুপেন্সি রেট’ কমেছে। বেসরকারি হাসপাতালে তা ঝড়ের গতিতে বেড়েছে।’’ যে নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হাতে বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিহিত করার মতো এত বড় ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে নতুন বিলে অস্পষ্টতা রয়েছে বলেও বিরোধীদের মত।

এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘‘কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, সরকারি হাসপাতাল এর মধ্যে নেই কেন? সরকারি হাসপাতালের নিজস্ব নজরদারি ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে কেউ ভুল করলে সরকারি নিয়ম মেনেই তার শাস্তি হয়। আর সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা কি জানেন না, আগে সরকারি হাসপাতাল ‘জীবন্ত যমালয়’ ছিল?’’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতার দাবি, তাঁদের আমলে সরকারি হাসপাতালের হাল ফিরেছে। এ বার তাঁরা বেসরকারি ক্ষেত্রে যাঁরা ভুল করছে, তাদের ভুল ‘শুধরে’ নিতে সুযোগ দিচ্ছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement