কী ভাবে ঘটল বিস্ফোরণ, তদন্ত চায় শোকার্ত গ্রাম

গ্রামে ঢোকার আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে কান্নার শব্দ। গ্রামে ঢুকলে পড়তে হচ্ছে ক্ষুব্ধ দৃষ্টির সামনে।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

ভরসা: মৃতদের পরিজনের পাশে ফিরহাদ হাকিম ও মৌসম নুর। রবিবার এনায়েতপুরে। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে ঢোকার আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে কান্নার শব্দ। গ্রামে ঢুকলে পড়তে হচ্ছে ক্ষুব্ধ দৃষ্টির সামনে।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের ভদোহীতে কার্পেট কারখানায় কাজ করতে গিয়ে বিস্ফোরণে শনিবার এনায়েতপুরের ৮ জন সহ মালদহের মোট ৯ জন মারা গিয়েছেন। বিস্ফোরণ নিয়ে কিন্তু ধোঁয়াশা কাটেনি। রোহতা বাজার এলাকায় ওই কার্পেট কারখানার অন্তরালে কী হত, তার তদন্ত দাবি করেছেন গ্রামের মানুষ।

রবিবার দুপুরে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এনায়েতপুরে গেলে শোকার্ত গ্রামের মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরেন। বিস্ফোরণে মৃত জাহাঙ্গির আনসারি ও কাদির আনসারির মা তাইরুন বেওয়া বলেন, “ছেলেরা কোনও দিনই বলেনি, ওখানে বাজি কিংবা বেআইনি কিছু তৈরি হত। কার্পেট তৈরি করতে করতে দু’ছেলের বাঁ হাতে কালশিটে পড়ে গিয়েছিল। এখন শুনছি বিস্ফোরণে ছেলেদের মৃত্যু হয়েছে। তাই আমরা চাই ঘটনার তদন্ত হোক।”

Advertisement

ফিরহাদও বলেন, “আমরাও চাই তদন্ত হোক। তবে জানি ঠিক তদন্ত হবে না। ক্ষমতার পরিবর্তন হলে অবশ্যই যথার্থ তদন্ত হবে।” বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিৎ মিশ্রের অবশ্য দাবি, ‘‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার

অবস্থা দেশের মানুষ জানেন। তা ঢাকতেই এখন উত্তরপ্রদেশের কথা বলছেন ফিরহাদ।’’

ফিরহাদ জানান, মঙ্গলবার দেহগুলি গ্রামে নিয়ে আসার কথা। তিনি জানান, রাজ্য পুলিশ উত্তরপ্রদেশে গিয়েছে। দেহগুলি নিয়ে আসার পাশাপাশি ঠিক কী হয়েছে, তাও উত্তরপ্রদেশের পুলিশের সঙ্গে থেকে খতিয়ে দেখবে রাজ্য পুলিশের ওই দলটি।

এ দিন মৌসম নুরও ছিলেন ফিরহাদের সঙ্গে। তাঁরা এনায়েতপুর ও কামালপুরে যান। মৃতদের পরিবারের হাতে দু’লক্ষ টাকা করে চেক দিয়েছেন। তবে, অনেক বাড়িতেই এখন সংসার কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ফিরহাদ বলেন, “ভাতা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরিরও ব্যবস্থা করা হবে।’’

গ্রামের মানুষের কিন্তু বক্তব্য, এলাকায় কাজের অভাব। রুজির টানে তাই ভিন্‌ রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে যেতেই হচ্ছে মালদহ, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাগুলোর প্রত্যন্ত এলাকার বহু লোককে। বিপদের ঝুঁকি নিয়েও তাঁরা যাচ্ছেন। বছরখানেক আগেও রাজস্থানে কাজে গিয়ে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছিলেন কালিয়াচকের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা আফরাজুল হক। জুলাইয়ের শেষ দিকে উত্তর দিনাজপুরের ৬ শ্রমিক উত্তর প্রদেশের বরেলীতে কেবল পাতার কাজ করতে গিয়ে গর্তে নেমে মাটি চাপা পড়ে মারা যান। তা নিয়েও কম হইচই হয়নি। অথচ এখনও রুজির টানে ভিন্ রাজ্যে যেতে হচ্ছে। ফিরহাদ জানান, সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement